Home » ডেইরি খামারে ভাগ্য বদল এমবিএ পাস জেবলু’র

ডেইরি খামারে ভাগ্য বদল এমবিএ পাস জেবলু’র

ডেইরি খামারে ভাগ্য বদল করেছেন উচ্চ শিক্ষিত তরুণ মোহাম্মদ সারওয়ার খান জেবলু। চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে এমবিএ পাস করার পর গ্রামের বাড়িতে গড়ে তোলেন ডেইরি ফার্ম। যেখানে তার বন্ধুরা এখনও চাকরির পেছনে ছুটছে, সেখানে উদ্যোক্তা হয়ে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন এই তরুণ। তার খামারে উত্পাদিত দুধ এলাকার চাহিদা পূরণ করে বিভাগীয় শহর সিলেটেও বিক্রি করা হচ্ছে। তবে দুগ্ধ খামারের ব্যবসাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান না, লক্ষ্য অনেক দূর এগিয়ে যাবার, ইত্তেফাককে এমনটাই বলছিলেন এই তরুণ উদ্যোক্তা। ইতিমধ্যে ব্যবসা সমপ্রসারণে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ সারওয়ার খান জেবলু ২০০৬ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের নবীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, সিলেট কমার্স কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি, ২০১২ সালে বিবিএ ও ২০১৩ সালে এমবিএ পাস করেন।
পড়াশুনা শেষে চাকরি নিয়ে তারুণ্যের হতাশা দেখে চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নেন এই উদ্যোক্তা। চাকরি নিব না, চাকরি দিব এই ইচ্ছে থেকেই এমবিএ পাস করার পর ২০১৫ সালে কুলাউড়ার জাব্দা গ্রামে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন ডেইরি খামার। শুরুতে ব্যবসার জন্য পরিবার থেকে ৩ লাখ টাকা ধার নেন তিনি। ২ লাখ টাকা দিয়ে একটি অস্ট্রেলিয়ান গাভী কিনে খামার শুরু করেন। বাকি এক লাখ টাকা খামারের শেড তৈরিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজে ব্যয় করেন। একটি গাভী দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে তার খামারে ১৮ টি গাভী রয়েছে। প্রতিটি গাভী কিনেছেন ২ লাখেরও বেশি টাকা দিয়ে। তার খামারে উত্পাদিত দুধ এলাকায় আমিষের চাহিদা পূরণ করে মৌলভীবাজার ও সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি গাভী থেকে দৈনিক ৭০থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি দুধ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গাভী পালনে সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে উদ্যোক্তা জেবলু বলেন, গোখাদ্য কুড়া, ভূসি, পাতা ভূসি, মুগ পাউডার, সয়াবিন খৈল ইত্যাদির দাম বেড়েছে। পাশাপাশি খাদ্যে ভেজাল তো আছেই। এছাড়া ওষুধের দামও বেড়েছে। শংকর জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে দুগ্ধ উত্পাদনএকটি লাভজনক ব্যবসা বলে জানান উদ্যোক্তা জেবলু। তবে এজন্য সঠিক ধারণা থাকা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। গাভী পালনে উন্নত ব্যবস্থাপনা, সঠিক প্রজনন, সুষম খাদ্য, রোগ দমন ও প্রাথমিক চিকিত্সা সম্পর্কে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে খামারিদের জানা প্রয়োজন।
ডেইরি খামারের পাশাপাশি ব্যবসা সমপ্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছেন উদ্যোক্তা সারওয়ার খান জেবলু। কুলাউড়া পৌর শহরে অত্যাধুনিক রেস্টুরেন্ট তৈরির কাজ চলছে। মে মাসের প্রথম দিকে এই রেস্টুরেন্ট চালু করা হবে বলে জানান তিনি। রেস্টুরেন্ট ও খামারে অনেক যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন এই উদ্যোক্তা।
তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটার পরামর্শ দিয়ে সারওয়ার খান জেবলু বলেন, তরুণরা বদলে দিতে পারে এই দেশ। চাকরির পেছনে ঘুরে তারুণ্যের একটা সময় নষ্ট করে দিচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই সময় নষ্ট না করে উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে মনযোগ দিলে ঘুচে যাবে বেকারত্ব। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানেরও। ফলে বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি।


Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *