Home » ধর্ষণ নিয়ে কিছু কথা-তানভীর আনজুম তুষার

ধর্ষণ নিয়ে কিছু কথা-তানভীর আনজুম তুষার

এ দেশ রক্তে অর্জিত, এ দেশ নারী ধর্ষনে অর্জিত, এ দেশ বিক্ষোভে অর্জিত, এ দেশ তাজ প্রাণ নিষ্প্রাণে অর্জিত। আজো এ দেশে রক্ত ঝড়ে রাজপথে পড়ে, আজো এ দেশে নারী ধর্ষিত হয় ঘরে ঘরে আজো এ দেশে বিক্ষোভ চলে প্রান্তরে প্রান্তরে। এ দেশেই আজো নিষ্প্রাণ হয়ে যায় কিছু প্রাণ।- মিক শাকিল
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা প্রায়ই ধর্ষণের ঘটনার নানা পরিসংখ্যান দিয়ে থাকে। তবে এই পরিসংখ্যানই চূড়ান্ত নয়। এর বাইরে বহু ঘটনা নজরে আসে না। ফলে আড়ালের ঘটনাগুলো আড়ালেই থেকে যায়। ধর্ষিতা এবং প্রতিপক্ষের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অবস্থানের তারতম্যের কারণে এসব ঘটনা সামনে আসে না। এমনকি মামলা পর্যন্তও গড়ায় না। আবার মামলা হলেও নানা কারণে পার পেয়ে যায় ধর্ষকরা। দেখা গেছে, গণমাধ্যম সরব হলেই কেবল ঘটনাগুলো সামনে আসছে। তবে যতটুকু গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় সে চিত্রও ভয়াবহ। গত সাড়ে ৫ বছরে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সারাদেশে ধর্ষণের যে চিত্র তুলে ধরেছে তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। তাদের দেয়া পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত সাড়ে ৫ বছরে দেশে ৫ হাজার ২৪৮টি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা (বিএমবিএস) বলছে, গত ৬ মাসে ১৪১ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৪ জনকে আর গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৩ নারী।
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম বলছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে শুধুমাত্র শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৯৪টি। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৬ জন শিশু। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৮ শিশুকে আর ৩ জন শিশু ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে আরো ২৮ শিশু।(জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকা) তবে এই পরিসংখ্যান যত ভয়াবহ-ই হোক এটি বাস্তবে ঘটে যাওয়া ঘটনার খণ্ডিত চিত্র মাত্র। যা হোক ধর্ষণের কারণ হিসেবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই দায়ি করে নারীর পোশাককে। অবশ্য ধর্মান্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে এর থেকে বেশি কী বা আশা করা যায়। বাংলাদেশে ধর্মান্ধতা এতটাই প্রকট যে ধর্ষণ আসলে কী সেটা না জেনেই মানুষ শুধুমাত্র ইসলাম কর্তৃক দেয়া পর্দার নির্দেশ অমান্য করার দায়ে ধর্ষণের দোষ চাপায় সেই ধর্ষিতা অসহায় নারীর উপরই। কিন্তু আমার জ্ঞান ও বিবেক বরাবরই বলে ধর্ষণের জন্য মানসিকতা দায়ি , পোশাক নয়। তনু, পাঁচ বছরের শিশু কন্যা, সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধ, ১ বছর ১০ মাস বয়সী শিশু কন্যা এদের ধর্ষণের কারন কখনোই পোশাক হতে পারে নাহৃ।মনে রাখবেন, আপনি আপনার নোংরা মানসিকতার পরিবর্তন না ঘটাতে পারলে সমগ্র নারী জাতিকে বস্তাবন্দি করলেও ধর্ষণ বন্ধ হবে না। সবশেষে আমার প্রিয় অনলাইন একভিস্ট মার্জিয়া প্রভা আপুর কথায় সুর মিলিয়ে বলতে চাই “যে বলে ধর্ষণ হয় শুধুই নারীর পোশাক দোষে, চোখ বুজে তুই মাররে লাথি ঐ পুরুষের অন্ডকোষে।”

লেখক: তরুণ সমাজ উন্নয়ন কর্মী।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *