যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ মঙ্গলবার শামীমার মায়ের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে শামীমার পারিবারিক আইনজীবী তাসনিম আখুনজি বলেছেন, তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল করবেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরও দুই ব্রিটিশ কিশোরীর সঙ্গে যখন যুক্তরাজ্য ছাড়েন শামীমা, তার বয়স তখন ১৫ বছর। সিরিয়ায় আইএস উৎখাত অভিযানে আশ্রয় হারিয়ে এখন তার ঠাঁই হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। সেখানেই গত সপ্তাহে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ১৯ বছরের এই তরুণী। ব্রিটিশ দৈনিক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সন্তানের জন্য তিনি লন্ডনে পরিবারের কাছে ফিরতে চান। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, জঙ্গিদের সমর্থন দিয়ে যারা দেশ ছেড়েছে, তাদের ফিরতে দিতেদ তিনি আগ্রহী নন। গত সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনি বলেছেন, তার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হল ব্রিটেন এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান করা। ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, ১৯ বছর বয়সী শামীমার বাবা-মা যেহেতু বাংলাদেশি, সেহেতু যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ ওই তরুণীর আছে। আর ১৯৮১ সালের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, জন নিরাপত্তা বিধান ও সুরক্ষার স্বার্থে যে কারো ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার ক্ষমতা হোম সেক্রেটারির রয়েছে। তাবে তার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ায় ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ছেন না। তবে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামীমা বলেছেন, তিনি কখনও বাংলাদেশে যাননি এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টও তার নেই। শামীমা বেড়ে উঠেছেন লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন এলাকায়। তিনি যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়া গিয়েছিলেন ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে। কিন্তু সীমান্ত পার হওয়ার পরপরই তার কাছ থেকে সেটা কেড়ে নেওয়া হয়। বিবিসি লিখেছে, কোনো ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আগে যদি তার সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী শিশুটি ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে। তাত্ত্বিকভাবে, পরে ওই শিশুটির নাগরিকত্বও বাতিল করার কথা ভাবতে পারে ব্রিটিশ সরকার। তবে এক্ষেত্রে তার অধিকার এবং রাষ্ট্রের জন্য আদৌ সে ঝুঁকি কি না, সেই সমীকারণ মেলাতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
বার্তা বিভাগ প্রধান