জিতলে ফাইনালে। আর হেরে গেলে বিদায়। এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে ১৪২ রানে অলআউট রংপুর রাইডার্স। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে পঞ্চমবার ফাইনালে খেলতে হলে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৪৩ রান করতে হবে।
এমন সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারে উইকেট হারায় ঢাকা। আগরে দুই ম্যাচে ৪২ ও ৫১ রান করা ডায়নামাইটসের এই লংঙ্কান ওপেনারকে বুধবার মাত্র ৪ রানে ফেরান মাশরাফি বিন মুর্তজা।
রংপুর ১৪২/১০
বুধবার প্রথমে ব্যাট করে উদ্বোধনীতে ৪২ রান করা রংপুর এরপর শূন্য রানের ব্যবধানে হারায় ৩ উইকেট। চতুর্থ উইকেটে ৬৪ রানের জুটির পর ফের ব্যাটিং বিপর্যয়। শেষ দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৯.৪ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন রংপুর রাইডার্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন রবি বোপারা। এছাড়া ৩৮ রান করেন মিঠুন। ১২ বলে ২৭ রান করেন নাদিফ চৌধুরী।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে টস জিতে রংপুর রাইডার্সকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
মিরপুর শেরেবাংলায় অনুষ্ঠিত বিপিএলের ‘অঘোষিত’ ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দেখে শুনে আগাতে থাকে রংপুর। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৬ রান সংগ্রহ করেন দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও নাদিফ চোধুরী। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে দুই ছয় এবং একটি চার হাঁকিয়ে ১৮ রান আদায় করে নেন গেইল-নাদিফ।
চলতি বিপিএলে প্রথম খেলতে নেমেই ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন নাদিফ চোধুরী। নিজের খেলা প্রথম ৫ বলে করেন ৫ রান। এরপর বল আর মাটিতে পড়তে দেননি জাতীয় দলে ‘সাবেক’ হয়ে যাওয়া মানিকগঞ্জের এই অলরাউন্ডার।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শুভাগত হোমকে হ্যাটট্রিক ছক্কা হাঁকান জাতীয় দলের হয়ে ২০০৬-২০০৭ মৌসুমে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা নাদিফ। ওভারের পঞ্চম বল ডট খেলে পরের বলেই বাউন্ডারির জন্য বল তুলে মারেন নাদিফ।
কিন্তু ফ্লাড লাইটের উপরে ওঠা বলটি মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার কায়রন পোলার্ডের হাতে জমা পড়ে। চলতি বিপিএলে ১২ ম্যাচ অপেক্ষার পর দলের গুরুত্বপূর্ণ দিনে খেলতে নেমে ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলে ১২ বলে তিন ছক্কা ও ২ চারের সাহায্যে ২৭ রান করে ফেরেন নাদিফ চোধুরী।
ঠিক পরের ওভারে রুবেল হোসেনের করা প্রথম বলটি অফসাইড দিয়েই বের হয়ে যাচ্ছিল। সেই বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন রংপুরের তারকা ওপেনার ক্রিস গেইল। ঠিক পরের বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হন রাইলি রুশো। চলতি বিপিএলে দুর্দান্ত খেলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করা রুশো ফেরেন শূন্য রানে।
দলীয় ৪২ রানে পরপর তিন বলে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যাওয়া রংপুরের হাল ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন ও রবি বোপারা। এই পার্টনারশিপে তারা ৬৪ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান। ২৭ বলে দুই চার ও সমান ছক্কায় ৩৮ রান করা মিঠুন কাজী অনিকের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন।
উইকেটে সেট হওয়ার পারও মিঠুনের এমন আউট সত্যিই লজ্জাজনক। এই বিপিএলেই একাধিক ম্যাচে (৪৯, ৩০ ও ৩৫) উইকেটে সেট হওয়ার পর আউট হয়েছেন মিঠুন। শুধু বিপিএলেই নয়! জাতীয় দলেও একাধিক ম্যাচে সেট হওয়ার পরও নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি।
তিন উইকেটে ১০৬ রান সংগ্রহের পর ফের বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। এরপর চার রানের ব্যবধানে হারায় তিন উইকেট। মিঠুন ৩৮ রান করলেও বেনি হাওয়েল ও মাশরাফি বিন মুর্তজা ৩, ০ রানের বেশি করতে পারেননি।
ইনিংসের শেষ দিকে রবি বোপারা উইকেটের এক পাশ আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। তার ৪৩ বলের ৪৯ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ১৪২ রান তুলতে সক্ষম হয় রংপুর।
রংপুর রাইডার্স: ক্রিস গেইল, নাদিফ চোধুরী, রাইলি রুশো, বেনি হাওয়েল, রবি বোপারা, মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, ফরহাদ রেজা, শফিউল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম অপু।
ঢাকা ডায়নামাইটস: উপল থারাঙ্গা, রনি তালুকদার, সুনীল নারিন, সাকিব আল হাসান, আন্দ্রে রাসেল, কায়রন পোলার্ড, নুরুল হাসান সোহান, রুবেল হোসেন, শুভাগত হোম চৌধুরী, কাজী অনিক ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান লিমন।

প্রতিনিধি