Home » ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সার্ভার বিপর্যয়, উত্তোলন করা যাচ্ছে না টাকা

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সার্ভার বিপর্যয়, উত্তোলন করা যাচ্ছে না টাকা

হাতে টোকেন আর চেক নিয়ে সিরিয়াল ঘোষণার সাথে সাথে ছুটছেন কাউন্টারে। তারপর ফিরছেন চেহারা কালো আর মুখভার করে। কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে, নেট নেই। টাক তোলা যাবেনা।

রবিবার সকাল থেকেই এ অবস্থা ডাচ-বাংলা ব্যাংক সিলেট শাখায়। হতশাগ্রস্ত গ্রাহকদের চোখেমুখে তাকানোর উপায় নেই।

হতশা আরও গভীর হচ্ছে যখন কর্তৃপক্ষ জানাতে পারছেন না, নেট কখন আসবে? এতে বিপর্যস্ত প্রায় সব গ্রাহক।

কর্মকর্তারা আপাতত টাকা জমা নিচ্ছেন, কিন্তু দিতে পারছেন না। অনেকটা আয়েশী ভাবে কাটছে তাদের সময়।

নগরীর বারুতখানা এলাকার লাইলি  বেগমের ((৩৪) মা একটি বেসরকারি ক্লিনিকে লাইফসাপোর্টে। প্রতিদিন প্রচুর খরচ। ঘরে নগদ টাকা নেই। বিকেলের মধ্যেই দরকার ৪৫ হাজার টাকা। এসেছিলেন চেক নিয়ে ব্যাংকে।

প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর সিরিয়াল ঘোষণা হলে কাউন্টারে গেলেন। হাতে চেক দেখেই একজন মহিলা কর্মকর্তা বললেন, সার্ভারে সমস্যা। নেট নেই। টাকা তোলা যাবেনা।

লাইলি বেগমের ফর্সা মুখটা কালো হতে থাকল। বিনয়ের সাথেই কর্মকর্তাকে জানালেন কোন উপায় আছে কি-না।

তিনি তাকে উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার কাছে পাঠালেন। ঐ কর্মকর্তা পাঠালেন আরেকজনের কাছে।

একই জবাব, আমার কিছু করার নেই।

নেট কবে আসবে এর কোন সঠিক জবাবও দিতে পারছেন না তারা কেউ। বলছেন, আসবে। কাজ চলছে। আমরা চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাচ-বাংলা ব্যাংক সিলেট শাখার ম্যানেজার তাওহিদ বক্সের অফিসে প্রবেশ করলে দেখা যায় বেশ কয়েকজন অতিথিকে নিয়ে বসেছেন তিনি। সমস্যার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেটভিউকে বলেন, আসবে। তবে কবে আসবে তা বলা যাচ্ছেনা। সকাল থেকেই এ অবস্থা। ব্যাংকটির সব শাখায়, সারাদেশে। দুপুরের দিকে একবার নেট এসেছিল, এরপর আর নাই।

এদিকে গ্রাহকদের মধ্যে এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা-কানাঘুঁষা। তাদের প্রশ্ন, নেট নেই অবস্থায় তারা টাকা জমা রাখছেন অথচ দিতে পারছেন না, এমন বৈপরিত্ত কেন? টাকা দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থাওতো থাকা উচিৎ। সবাইকে না হোক, অন্তত লাইলি বেগমের মতো পরিস্থিতিতে যারা আছেন, তাদের  জন্যতো এরকম ব্যবস্থা রাখা যেত।

নেট কবে আসবে আর ডাচ-বাংলা কবে টাকা দিতে পারবে, তা অনিশ্চিত। তবে জরুরী ভিত্তিতে প্রযুক্তির হঠাৎ বিপর্যয়ের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে ভাবতে হবে বলেই মনে করছেন সচেতন গ্রাহকরা।

তারা এটিও বলছেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারকে বুঝতে হবে, অনলাইন ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ কেবলমাত্র যাত্রা শুরু করেছে। এ অবস্থায় এমন বিপর্যয় অস্বাভাবিক নয়। তবে অস্বাভাবিক ব্যাপার হচ্ছে, এর বিকল্প ব্যবস্থা না থাকা। তাছাড়া যেখানে গ্রাহকের কোনই দোষ নেই, সেখানে তারা হয়রানীর স্বীকার হবেন কেন, কোন যুক্তিতে।

ফয়সল আহমদ নামক একজন ট্রাভেল ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এইভাবে, সকাল থেকে নেট বিপর্যয়। টাকা তোলা যাচ্ছেনা। এটি কাউন্টারে গিয়ে জানতে হবে কেন? একটি নোটিশ টানিয়ে দিলে কর্মকর্তাদের  কি এমন ক্ষতি হতো?

না আরাম-আয়েশের এই সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাননি তারা? এমন বাঁকা কথাবার্তাও বলছেন কেউ কেউ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *