Home » কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও ব্যবসায়ী

কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও ব্যবসায়ী

রাজবাড়ীতে গৌর চন্দ্র দাস নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থকে ব্যবসা সূত্রে তিনি এই টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

গৌর চন্দ্র দাসের বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামে। সম্প্রতি বিধান কুমার প্রামাণিক নামের এক ব্যবসায়ী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সদর থানায় জিডি করেছেন। তাঁর বাড়ি কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের দামুকদিয়া গ্রামে। গান্ধিমারা বাজারে তাঁর ভুসিমালের ব্যবসা রয়েছে।

বিধান কুমার প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গৌর দাসের সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্ক। ভুসিমালের ব্যবসা বাবদ আমি তাঁর কাছে ২৫ লাখ টাকা পাব। ১৫ জানুয়ারি জানতে পারি, গৌর চন্দ্র দাস রাতের আঁধারে পরিবারের স্বজনদের নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। শুধু আমিই একমাত্র পাওনাদার নই। তাঁর কাছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ব্যাংকও টাকা পাবে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, গৌর চন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী আদালতে চেক জালিয়াতির মামলাও রয়েছে। গান্ধিমারা বাজারের ব্যবসায়ী সুরেশ প্রামাণিক পাবেন ১৫ লাখ ও গণেশ পাড়ৈ পাবেন ৪ লাখ টাকা। রাজবাড়ী, বালিয়াকান্দি, সোনাপুর, রামদিয়া, কালুখালী, পাংশা ও মাছপাড়া এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীও তাঁর কাছে টাকা পাবেন।’

বিধান প্রামাণিক অভিযোগ করেন, ‘রাতের আঁধারে গৌর গা ঢাকা দিয়েছেন জানার পর তাঁর দুই বোনকে টাকার জন্য চাপ দিই। এ কারণে গৌর চন্দ্রের মুঠোফোন থেকে ২১ জানুয়ারি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার পাওনা টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো হুমকি দিচ্ছে। থানায় জিডি করেছি।’

রামদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী প্রণয় পাল বলেন, তিনি বাজারে ভুসিমাল ও পাটের ব্যবসা করেন। গৌরের কাছে তিনি ১৪ লাখ টাকা পাবেন। তাঁর ব্যবসায় তেমন মূলধন নেই। গৌর চন্দ্র উধাও হয়েছে জানার পর থেকে তিনি শয্যাশায়ী হয়ে আছেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের রাজবাড়ী শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ও ব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘গৌর চন্দ্রের দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া হয়, যা বর্তমানে সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৮ টাকা। আরেকটি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে নেন ৯০ লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৭ হাজার ৪৪৫ টাকা। এসব ঋণের বিপরীতে তিনি মিল ও বাড়ির জমি বন্ধক রেখেছেন। তাঁর উধাও হওয়ার বিষয়টি জানার পর আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন র্কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁর ঋণের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ র্মাচ। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি থানায় জিডি করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *