সিলেটে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক, সাবেকমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৪৯ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি থানায় এ মামলাটি (৩৭(০৯) ২০২৪) দায়ের করা হয়।
মামলার বাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ লামাপাড়া এলাকার মো. মঈনুদ্দিনের ছেলে রাশদুজ্জামান রাসেল।
১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৩/৪সহ দণ্ডবিধির ১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/১১৪ ধারায় দায়ের হওয়া এ মামলায়
৯৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা রুজু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আকবর হোসেন। এ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে এ থানার এসআই মো. আবদুল আলীমকে।
মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরছাড়াও এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শামীম, সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, ৩২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, ৩৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খাঁন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠু, রুহুল আমিন শিবলু, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার, ১৬নং ওয়ার্ড যুবলীগর সভাপতি শেবুল আহমদ সাগর, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পিযুষ কান্তি দে, সিলেট মহানগর শ্রমিক লীগের সহসভাপতি এনামুল হক লিলু, শিমুল আহমদ, কামরুল হাসান রাব্বি, সিলেট জেলা যুবলীগ নেতা এএস শাওন, রঞ্জন দে, অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ, আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েতুল বারী মোর্শেদ, ফাহিম আহমদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মুক্তার হোসেন চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সারোয়ার হোসেন চৌধুরী, ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিক আহমদ, অজিত কুমার সাহা, শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আবুল ফজল খোকন, সিলেট জেলা যুবলীগের সহসভাপতি শামীম ইকবাল, নিমার আলী, আজহার আহমদ রিফাত, সুমন আহমদ, নাজমুস সাকিব চৌধুরী, নাজমুল ইসলাম, এলিম আহমদ, ছাদ উদ্দিন মেম্বার, মনি আহমদ, সেলিম মিয়া, আব্দুল আলিম তুষার, রাতুল কর পুরকায়স্থ, ফয়ছল আহমদ, মাসুক আহমদ, আব্দুল কাদির, আব্দুল মালিক, শিপলু সরকার, শাহ মো. জিয়াউল কবির পলাশ, আশরাফুল আলম, সিলেট সিটি করপোরেশনের নিরাপত্তা শাখার সুপারভাইজার ও শ্রমিক লীগ নেতা আনসার আলী, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, জুলফিকার আলী ভুট্টো, মুশাহিদ আলী, আবুল হাসনাত, মো. আব্দুশ শহিদ সাদেক, কাজী মাসুক আহমদ, কামরুল হক তায়েফ, শেখ নজরুল ইসলাম বিজয়, এহসানুল করিম বাবরুর, দরবেশ আলী, আবু বক্কর মো. শাহজাহান, মো. ইয়াহিয়া তানজিল, চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এপিপি প্রবাল চৌধুরী পূজন, ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট, সাবেক কাউন্সিলর তাকবির আহমদ পিন্টু, সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক বকস লিপন, সাবেক কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু, শেখ মো. ইয়াহিয়া, তোফায়েল আহমদ, রোজভিউ হোটেলের পরিচালক মুহি উদ্দিন চৌধুরী, রুমন খান, সম্রাট, মো. আব্দুল খালিক, আহসান আহমদ রাহাত, মো. সালাহ উদ্দিন, সুলতান আহমদ, লিডিং ইউনির্ভাসিটি ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম আহমদ হামীম, সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মহিবুস সালাম রিজভী, মাহফুজ আহমদ সুলতান, সিদ্দিকুর রহমান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ নেতা আহমদ উদ্দিন সাজন, সেলিম মিয়া, এস আর রুমেল, এনামুল ইসলাম ইমন, সিলেট জেলা যুবলীগ নেতা আজাদুর রহমান চঞ্চল, যুবলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক এহসানুল করিম মাবরুল, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক জাকারিয়া আহমদ, সৈকত হাসান মানিক, যুবলীগ নেতা লিটন আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা মো. হেলাল উদ্দিন, মো. কালাম, সাহাব উদ্দিন সাজু।
বাদির অভিযোগ, তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ৫ জুন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র-জনতা সরকারি চাকুরিতে কোট সংস্কারের দাবিতে দেশে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা স্বত্বস্ফ‚র্তভাবে ঘোষিত কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করি। ৪ আগস্ট মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা সিলেট সোবাহানীঘাটস্থ বাসস্ট্যান্ডে সশস্ত্র অবস্থায় নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, হাতবোমা, ককটেল বিষ্ফেরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং সড়কে অবস্থানরত ছাত্র-জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রসারী আমাকে ধরে টেনে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অতি নিকট থেকে বুকে গুলি করে। গুলিতে রাসেলের বুকের ডান পাশ ঝাঝরা হয়ে যায়। পরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে সড়কে ফেলে রেখে আন্দোলকারীদের উপর হাত বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করতে তাকে। এসময় তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের বেধড়ক পেটাতে থাকে। তাদের হামলায় ছাত্র-জনতা গুরুতর আহত হয়। আশপাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসাপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার বুকের ডান পাশ হতে গুলি বের করেন।