চাঁদপুর শহরে দুই পক্ষের একটি ঘটনা তদন্তকে কেন্দ্র করে থানায় প্রবেশ করে এসআই আব্দুস ছামাদকে লাঞ্ছিত করেছে একদল শিক্ষার্থী। এই ঘটনা দেখে মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই ঘটনার পর থেকে থানায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এর আগে, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডে এক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তাঁর মেয়ে। খবর পেয়ে ওই নারীর মেয়ের সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় পুলিশের সামনেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন বিএনপি কর্মী-সমর্থক ও শিক্ষার্থীরা। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে একদল ছাত্র চাঁদপুর মডেল থানায় ছুটে আসেন। ওসি আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়। পুলিশ তাঁদের আটক করার জন্য অভিযানে বের হলেও তাঁরা পালিয়ে যায়। এরপর পুনরায় ছাত্ররা মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) থানায় এসে একই বিষয় নিয়ে হট্টগোল করেন।
এ ঘটনার পর এক ভিডিওতে দেখা যায়, মডেল থানার প্রধান দরজার সামনে ওসি আলমগীর হোসেনকে ঘিরে ধরে হট্টগোল করছেন কিছু শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে থানার ভেতর থেকে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুস ছামাদকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে আনেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থী পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করার চেষ্টাও করতে দেখা গেছে। এসব দেখে এক পর্যায়ে ওসি আলমগীর হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে দ্রুত থানায় ছুটে আসেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ সূত্র জানায়, চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়ায় সোমবার বিএনপি নেতা-কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমন্বয়ক পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী থানার ওই তদন্ত কর্মকর্তার ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের একাংশ থানায় এসে এসআই আব্দুস ছামাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ সময় কয়েকজন যুবক ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আপনি আমার বাবার বয়সী। ছেলের মতো মনে করে ক্ষমা করে দিন।’ জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বলেন, ‘আমার বড় ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছে, বিসিএস দেবে। ছোট ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তোমরা একটু ধৈর্য্য ধর, শান্ত হও।’
থানার ওসির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আসিবুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ওসি সাহেব অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। সমস্যা হলেও সমাধান রয়েছে। তবে পুলিশ বাহিনীকে তাঁর স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।