Home » নারীকে আমরা কতটুকু নিরাপদ রেখেছি?

নারীকে আমরা কতটুকু নিরাপদ রেখেছি?

সানজীদুল আলম সজীব :

নারীকে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পেরেছি? কতটুকুই বা নিরাপদ রেখেছি? কেমনই বা নারীর অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছি?

আজ ৮ মার্চ, বিশ্ব নারী দিবসে এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ করতে গিয়ে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলাম। নারী দিবসে প্রতি বছরই সেমিনার, ওয়ার্কশপ থেকে শুরু করে নানা ধরনের সচেতনতা মূলক কর্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। তবে বার বার দেখছি নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

করোনা মহামারিতে গোটা দেশ যখন বিপর্যস্ত, মানুষ যখন ঘর বন্দী। মানুষের সীমিত চলাচলের কালেও নারীর প্রতি পারিবারিক,সামাজিক ও যৌন সহিংসতা কমেনি, বরং বেড়েছে।

আমরা পারি নি একজন বাবা হয়ে নিজের কন্যাকে নিরাপদ রাখতে, পারিনি একজন ভাই হয়ে বোনকে সুরক্ষা দিতে, পারিনি শাশুড় হয়ে পুত্রবধূকে নিরাপদ রাখতে, একজন প্রেমিক হয়ে প্রিয়তমাকে আগলে রাখতে । এমন হাজারো উদাহরণ আছে।

তবে আমরা কী পেরেছিলাম?

আমরা সবসময় নারীর পোষাককে দায়ি করেছি, নারীর চলাফেরাকে দায়ি করছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবসময় আমরা দুটি ভাবে বিভক্ত হয়ে গেছি। দেখা যায় একটি পক্ষ নারীকে দোষারোপ করেছে, অন্য একটি পক্ষ পুরুষদের।
তাহলে দোষ কার?

দোষ সমাজের, দোষ পরিবারের। তাহলে কী করছে আমাদের পরিবার বা সমাজ!
একজন শিশুর প্রথম পাঠশালা হলো পরিবার। তার পারিবারিক শিক্ষা তাকে চারিত্রিক দিক থেকে সুশিক্ষিত করবে। পরিবারের পরেই সমাজ।কেমন সমাজে বেড়ে উঠছে, চারপাশে কী প্রতিনিয়ত কী ঘটছে, তা নিত্যই উপলব্ধি করে একজন শিশু। একটি ভাল সমাজই পারে একটি সুন্দর, নারীর প্রতি সহিংসতা মুক্ত দেশ গড়তে।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫৪৬ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৫১ জনকে, আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন। এছাড়া ৯৭৪ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সর্বমোট ২৫৮৫ জন নারী শিশু সহিংসতার শিকার হয়, পরিসংখ্যান বলছে বিগত ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে ২০২০ সাল।
যদিও আমাদের সামাজিক ব্যবস্হার যাঁতাকলে চাপা থেকে যায় অনেক নিপীড়ন , ধর্ষণের মত ঘৃন্যতম ঘটনা।

আমরা আজকে লোকলজ্জার ভয়ে একটা ঘটনা চাপিয়ে ফেলছি আরেক দিন সেটা আপনার শিশু কন্যার ক্ষেত্রে ও হতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে, অন্তত নিজের দিক বিবেচনায় রেখে সচেতন থাকবো।

কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে চাই তাহলে–
“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *