সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ কলেজের নতুন ছাত্রীনিবাসের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শীঘ্রই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সামনের মার্চ মাসেই উদ্বোধন করা হবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ৫তলাবিশিষ্ট এই ছাত্রীনিবাসের। ১২০ আসনবিশিষ্ট ছাত্রীনিবাসটি মুরারিচাঁদ কলেজের অদূরে টিলাগড় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রোডের প্রবেশমুখে টিলাঘেরা প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে অবস্থিত।
মুরারিচাঁদ কলেজের ছাত্রীদের আবাসনব্যবস্থার সংকট দূর করতে নতুন একটি ছাত্রীনিবাস স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। পুরাতন ছাত্রাবাসের পূর্বপাশে ও টিলাগড় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-ইকোপার্ক সড়কের প্রবেশমুখে বামপাশে কলেজের এক একর জায়গাজুড়ে সীমানা নির্ধারণ করে ৬ শতকের উপর একটি ছাত্রীনিবান নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর ৪ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রথমে ৪ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এতে বাজেট ধরা হয় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। দীর্ঘ ৭ বছরে কয়েক দফায় ৪ তলা ভবনের নির্মাণ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪ তলা ভবনের কাজ যখন শেষ পর্যায়ে- ঠিক তখন অনুমোদন পায় পঞ্চম তলা । পঞ্চম তলা এবং বাউন্ডারি দেয়ালের জন্য বরাদ্দ হয় আরো ১ কোটি। বাউন্ডারি দেয়াল ও গেইটের কাজ শেষ করে এখন পঞ্চম তলার কাজও প্রায় শেষ। এখন কেবল উদ্বোধনের অপেক্ষায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আধুনিক এই ছাত্রীনিবাস।
মুরারিচাঁদ কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমদ জানান, মুরারিচাঁদ কলেজের নতুন ছাত্রীনিবাসটির উদ্বোধন আগামী মার্চেই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ.মান্নানের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে পরিকল্পনামন্ত্রীর। তবে দিন-তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, এই নিবাসে ১২০ জন ছাত্রী থাকতে পারবেন। এখানে রয়েছে আলাদা খাবার কক্ষ, টিভি দেখার বড় হল রুম, স্পোর্টস রুম ও ইন্টারনেটসহ আধুনকি সুযোগ-সুবিধা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রীনিবাসটি ঘুরে দেখা যায়, ৫টি তলায়ই আলো ঝলমলে বারান্দায় দামি মোজাইক পাথর এবং প্রতিটি বাথরুম ও টয়লেটে দৃষ্টিনন্দন টাইলস লাগানো। ১২০ আসনবিশিষ্ট এই নিবাসের প্রতি কক্ষে থাকবেন ৪জন করে ছাত্রী। প্রত্যেকটি থাকার কক্ষে রয়েছে আলাদা আলাদা বাথরুম ও টয়লেট। রুমগুলো ইতোমধ্যে সাজানো হয়েছে উন্নত জাতের কাঠের খাট ও পড়ার টেবিল-চেয়ার ইত্যােদিতে। ছাত্রীদের টেলিভিশন দেখার জন্য রয়েছে আলাদা বড় কমন রুম। রাখা হয়েছে একটি বিশাল টিভিও। রয়েছে আলাদা খাবার কক্ষ এবং খেলাধুলার জন্য একটি বিশাল স্পোর্টস রুম। এছাড়াও প্রতি তলার ফ্লোরে ৩টা করে আলাদা কমন টয়লেট ও বাথরুম রয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল হাকিম বলেন, মুরারিচাঁদ কলেজের নতুন ছাত্রীনিবাসটি খুবই আরামদায়ক ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন। এটি নির্মাণে একটু বেশি সময় ব্যয় হলেও গড়ে তুলা হয়েছে উন্নতমানের করে এবং বিদেশি ছাত্রী হোস্টেলের আদলে।
তিনি বলেন, ৫তলা ভবনটি নির্মাণে ২ ধাপে বরাদ্দ দেয়া হয় ৪ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগেরও বেশি কাজ শেষ হয়ে গেছে ভবনের। বাকি কাজটা শেষ হয়ে যাবে ১০-১২ দিনের মধ্যেই। পরিকল্পনামন্ত্রীর শিডিউল অনুযায়ী সম্ভবত আগামী মার্চ মাসেই উদ্ধোধন করা হবে আধুনিক এ ছাত্রীনিবাসের।
প্রতিনিধি