Home » বরিশালে মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে, যা বলেছিলেন এই নারী ব্যবসায়ী

বরিশালে মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে, যা বলেছিলেন এই নারী ব্যবসায়ী

বরিশাল প্রতিনিধি , অনলাইন সংস্করণ : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তাকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই মৃত্যু হয়েছে শিরিন খানম (৩০) নামের এই নারী ব্যবসায়ীর।গত রোববার রাত ৯টা ৪ মিনিটে ফেসবুক লাইভে ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ড কথা বলেন শিরিন। তার স্বজনেরা জানান, এর কিছুক্ষণ পরই তিনি নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে তাকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই নারীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, তার শরীরে বিষাক্ত কোনো মেডিসিন পুশ করা হয়েছে। তবে শিরিন খানম নিজেই ওই ইনজেকশন পুশ করেছেন, না তার শরীরে কৌশলে অন্য কেউ পুশ করেছে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে শিরিন খানম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জনি ও তার বউ, কয়েস মিয়া, রনি, মারুফ এবং তার এক বন্ধু আলো আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেষ করে দিল। অনেক অনুরোধ করেও দোকানটি রক্ষা করতে পারলাম না। আমি বিচারের ভার জনগণের ওপর দিয়ে গেলাম।’

মৃত শিরিন খানম বরিশাল নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের ভাড়া বাসায় থাকতেন। বান্দ রোড স্টিমারঘাট জামে মসজিদ মার্কেটে শিরিন মেডিকেল হল নামের ফার্মেসি রয়েছে তার। শিরিনের বাবার বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায়। বরিশাল নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের মো. হুমায়ুন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। পরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাদের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

জানা গেছে, ওই নারীর মৃত্যুর পরপরই তার জনপ্রিয় ‘শিরিন খানম’ নামের ফেসবুক আইডিটি ডিঅ্যাক্টিভ হয়ে যায়। এর আগেই অনেকে তার ফেসবুক লাইভের ভিডিও সংরক্ষণ করেন। ওই ভিডিও চিত্রে শিরিন তার মালিকানাধীন ফার্মেসিটি উৎখাতের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে স্থানীয় ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পার্শ্ববর্তী ওষুধ ব্যবসায়ী জনিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন।

ফেসবুক লাইভে তাকে (শিরিন খানম) মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার কথাও বলা হয়। এমনকি ‘শিরিন ফার্মেসি’ নামের তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বেশ কয়েকজন তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে তিনি দোকান ছেড়ে না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে।শিরিনের স্বজনদের অভিযোগ, তাকে (শিরিন) হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিরিনের ভাই ইউসুফ মৃধা বাদী হয়ে গতকাল সকালে কোতোয়ালি থানায় আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর (১০ নম্বর ওয়ার্ড) এ টি এম শহীদুল্লাহ কবির বলেন, ‘ওই দোকানের মালিক স্টিমারঘাট জামে মসজিদ কমিটি। সম্প্রতি তাকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়ার পর শিরিন আমার কাছে এসেছিলেন। তাকে আমি বলেছি, এখানে আমার কিছুই করার নেই। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত করে বলা যাবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *