বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই গ্রাহকদের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী অন্য দেশের, যাদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ যুক্তরাজ্যে থাকেন।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারের কৌশল নির্ধারণে ওই ফেইসবুক গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহার করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
ব্রিটিশ ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি গত মাসে ওই ঘটনা ফাঁস করে দিলে বড় ধরনের ধাক্কা খায় ফেইসবুক।
তীব্র সমালোচনার মুখে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের প্রাইভেসি সেটিংসে পরিবর্তন আনে। বিজ্ঞাপনদাতাদের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে- এমন কয়েকটি ডেটা ব্রোকার ফার্মের সঙ্গে ব্যবসাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ওই তথ্য কিনেছিল ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজভিত্তিক ফেইসবুক অ্যাপের মালিকের কাছ থেকে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের তৈরি করা ওই অ্যাপের মাধ্যমে চালানো ওই কুইজে অংশ নিয়েছিলেন ৩ লাখ ৫ হাজার ফেইসবুক ব্যবহারকারী। আর তাদের বন্ধুতালিকা থেকে আরও কয়েক কোটি ফেইসবুক অ্যাকাউন্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল ওই অ্যাপের মাধ্যমে।
গ্রাহকদের ওই ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষও তাদের ওই কথায় ভরসা রেখিছিল। কিন্তু চ্যানেল ফোর এক প্রতিবেদনে দেখিয়ে দেয়, ট্রাম্পের ভোটের প্রচারে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ব্যবহার করা তথ্যের একটি অংশ এখনও বাইরে রয়ে গেছে।
কতজন ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে গেছে, সে বিষয়ে একটি ব্লগে ধারণা দিয়েছেন ফেইসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। তিনিই জানিয়েছেন, ওই সংখ্যা আট কোটি ৭০ লাখের মত হতে পারে।
ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাদের আরও অনেক কিছু করা উচিৎ ছিল। আমরা সেটা করব।”
জাকারবার্গ বলছেন, তিনি আগে ভাবতেন, ফেইসবুকের সুবিধা কে কীভাবে ব্যবহার করল, সেই দায় ব্যবহারকারীর ওপরই বর্তাবে।
কিন্তু এখন ফেইসবুক প্রধানের ধারণা হয়েছে, তার সেই চিন্তায় সীমাবদ্ধতা ছিল। তিনি এখন বুঝতে পারছেন, ফেইসবুককেও আরও দায়িত্ব নিতে হবে।
জাকারবার্গ সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে নতুন আরেক সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন তারা। ফেইসবুকের সার্চ বক্সে ইমেইল ঠিকানা বা ফোন নম্বর দিয়ে কোনো ব্যবহারকারীকে খোঁজার যে ফিচারটি আছে, কিছু লোক তার অপব্যাবহার করছে।
আপাতত ওই ফিচারটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাঁচ কোটি নয়, প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে গেছে বলে ধারণা করছে ফেইসবুক।
নির্বাহী সম্পাদক