মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা এবং জাতিগত শুদ্ধি বা নির্মূল অভিযানসহ ভয়াবহ ও পৈশাচিক অপরাধযজ্ঞ ঘটার বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের একজন সদস্য সম্প্রতি এসব তথ্য দিয়েছেন।
রাধিকা কুমারাস্বামী নামের জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আনাতোলি বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে প্রথমে রোহিঙ্গা যুবকদের হত্যা করা হয় এবং এরপর রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাদের ওপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। বড় বড় ভবনে ও আটককেন্দ্রগুলোতে এইসব পরিকল্পিত অপরাধ চালানো হয়। রোহিঙ্গা শিশুদের ওপরও নির্যাতন চালানোর সাক্ষ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান। রোহিঙ্গা শিশুদেরকে বাবা-মা থেকে পৃথক করা হয় এবং এমনকি কখনও কখনও তাদেরকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলা হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা মিয়ানমারের ৬ জন জেনারেলকে চিহ্নিত করেছি যাদের যুদ্ধ-অপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সম্পর্কে অবশ্যই তদন্ত চালাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাখাইনে যা ঘটছে তা এক নতুন সামরিক অভিযান এবং এ নিয়ে আমরা তীব্র উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি, কারণ এক বছর পর দেখা যাচ্ছে যে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ।
রাধিকা কুমারাস্বামী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরগুলোর শোচনীয় অবস্থা ও তাদের চরমপন্থী হয়ে ওঠার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা বেকার ও তাদের শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই এবং সারা দিন তারা এক জায়গায় থাকছে; এমন পরিণতি কে চাইতে পারে?
তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল অবস্থায় থাকতে পারে। আর তা সম্ভব না হলে রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে অপেক্ষাকৃত বেশি নিরাপদ অঞ্চলে পাঠানো অনিবার্য হয়ে পড়বে। জাতিসংঘ ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনেও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসহ ব্যাপক সহিংসতা ঘটার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল।
প্রতিনিধি