বাংলাদেশে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার সমান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ এখানে পিছিয়ে থাকবে না। সব নাগরিকের অধিকার সমান আমরা নিশ্চিত করতে চাই এবং এটা নিশ্চিত করবো-এটাই আমাদের লক্ষ্য।’ নিজেকে অবহেলিত না ভাবতেও সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫০০ জন সদস্যকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সরকার প্রধান। এদের মধ্যে ২০ জনকে নিজে চেক তুলে দেন শেখ হাসিনা।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শিক্ষা-দীক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আমাদের সকল জনগোষ্ঠী যেন সমান সুযোগ পায়, কেউ যেন অবহেলিত না থাকে। কেউ যেন দূরে পড়ে না থাকে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা বিশেষভাবে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যার ফলে আজকে এই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্ত সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা নিজস্ব স্বকীয়তায় পোশাক পরে অনুষ্ঠানে আসার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার খুব ভাল লাগল, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ পোশাক পরে সুন্দরভাবে এসেছে। এটা খুবই সুন্দর লেগেছে। খুবই ভাল লেগেছে। কাজের প্রয়োজনে মানুষ পোশাক পরবে এতে সন্দেহ নাই। কিন্তু নিজের সংস্কৃতি, নিজস্ব স্বকীয়তাটাও মাঝে মাঝে প্রকাশ করা প্রয়োজন। তাতে মানুষ দেখতে পারে, আমাদের বৈচিত্র্যটা কত চমৎকার? যাতে সেটা দেখার একটা সুযোগ হয় বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটাই চাই, শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে সকলেই রাষ্ট্রপরিচালনায় আসবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। আমাদের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং দেশের সার্বিককাজে তোমরা যারা এখানে উপস্থিত আছো, যারা বৃত্তি পেয়েছো প্রত্যেকেই নিজেরা অবশ্যই অবদান রাখবে এবং নিজেদেরকে সেভাবে গড়ে তুলবে।
পাশাপাশি নিজস্ব কিছু কাজ, নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা বজার রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যার যার পেশা, সেই পেশাটা ছেড়ে দিলে চলবে না। সেই পেশাটাকেও ধরে রাখতে হবে এবং সেটাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই যেন আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখে সেই দিকে তোমাদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে সেটাই আমি চাই।
টানা তৃতীয়বার ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দিতে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে আবার জনগণ ভোট দিয়েছে। সরকার গঠন করে দেশের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আর এই সেবার ক্ষেত্রে প্রথম এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর হাতে বিশেষ ছাত্রছাত্রীদের হাতে বৃত্তির চেক তুলে দিতে পারলাম।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘দেশটা আমাদের, এই কথাটা সবাইকে মনে রেখে যার যার ক্ষেত্রে সবাই কাজ করে যাবে এবং এখানে যারা কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, মেডিকেল ও বিভিন্ন সাবজেক্টের উপরে পড়াশোনা করছে, তারাই একদিন দেশ গড়ার কাজে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্রতি দোয়া ও আশীর্বাদ জানিয়ে এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের মতো মানুষ হও এবং আমাদের দেশের উন্নয়নে অবদান রাখো এবং স্ব স্ব পেশাকেও উন্নত মানে বিকশিত করো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রীপরিষদের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী সম্পাদক