মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় নিজ ঘরে সন্তানদের সামনে ঘুমন্ত স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্ত্রী।
রোববার (২৭) রাতে ৯টার উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত আব্দুল মুসলিম (৪০) কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের মৃত ফিরোজ আলীর পুত্র।
নিহতের স্ত্রী রিমা বেগম (৩৫) উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের দিলদারপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে রিমা পলাতক রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আব্দুল মুসলিমের সাথে রিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে সাদিয়া বেগম, নাদিয়া বেগম, নাহিদ, সাহিদ নামে চারটি সন্তান রয়েছে।
নিহত আব্দুল মুসলিমের ভগ্নীপতি মন্তাজ আলী জানান, রোববার রাতে তিনি পার্শ্ববর্তী পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারে ছিলেন। রাত পৌনে দশটার দিকে নিহত মুসলিমের মেয়ে সাদিয়া তাঁর (মন্তাজ) মোবাইলে ফোন দিয়ে আহাজারি করে বলে তার পিতাকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। ফোন পেয়ে তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখেন ঘরের ভিতর বিছানায় মুসলিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। মুসলিম তাঁর পরিবার নিয়ে আলাদা থাকতেন। তাঁর বাড়ির আশেপাশে কোন বাড়ি না থাকায় তাকে কোপানোর সময় সন্তানরা চিৎকার করলেও কেউ শোনেননি। পরে মুসলিমের ভাইয়েরা খবর পেয়ে সবাই তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুসলিমের ভাই মখলিছ মিয়া জানান, আমার ভাতিজি সাদিয়া বলেছে ঘটনার সময় তারা পাশের ঘরে ছিলো। হঠাৎ পিতার চিৎকার শুনে এসে দেখে রিমা বেগম (তাদের মা) তাদের পিতাকে দা দিয়ে কোপাচ্ছে। এসময় তারা চিৎকার শুরু করলে রিমা তাঁর ছোট ছেলেকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, ওইদিন সন্ধ্যার সময় মুসলিম ও রিমা বেগমের ঝগড়া হয়। পরে মুসিলম বাজারে চলে যায়। বাজার থেকে ফেরার পর খুনের ঘটনাটি ঘটে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায়শই তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি লেগে থাকতো বলে শুনেছি। ঘটনার দিনও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আর এই পারিবারিক কলহের জেরেই স্বামী মুসলিমকে স্ত্রী রিমা ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রিমা বেগম পলাতক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।