পাঁচবার এমপি নির্বাচন করে ৭০ বছরের বৃদ্ধ সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস প্রতিবারই পেয়েছেন এক ভোট। এলাকার লোকজন মজার ছলে তাঁকে ‘এমপি সুধীর’ বলে ডাকেন।
পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে ষষ্ঠবারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনার শীর্ষে চলে এসেছেন তিনি।
মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের গিলাবাদ গ্রামের মৃত যোগেশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস। একসময় সচ্ছল কৃষক ছিলেন তিনি। এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ২৯ বছর আগে তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি রানী বিশ্বাস দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করে হেরে যান। এর কয়েক দিন পরই তাঁর স্ত্রী মারা যায়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে স্বাভাবিক জীবনবোধ হারান সুধীর রঞ্জন।
তারপর থেকে স্বাধীনচেতা সুধীর কারো কাছে হাত না পেতে জমি আর বাড়ির গাছপালা বিক্রি করে এমপি পদে নির্বাচনে দাঁড়ান। টানা পাঁচবার ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। কিন্তু একবারও মনোনয়নপত্রে নাম প্রস্তাবকারী আর সমর্থনকারীরও ভোট পান না তিনি। তবে নিজের ভোটটি নিজেকে ঠিকমতোই দেন। ভোটে জিততে না পারলেও তাঁর আক্ষেপ নেই। কারণ তাঁর নিজস্ব কর্মীবাহিনী নেই। নিজেই নিজের নির্বাচনী পোস্টার লাগান, লিফলেট বিলি করেন। এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
সুধীর রঞ্জন ভোটের লড়াইয়ের জন্য জমানো টাকার পাশাপাশি বসতবাড়ির একটি রেইনট্রি গাছ বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গত বুধবার গ্রামের বাড়ি থেকে হেঁটে একাই উপজেলা পরিষদে যান। এরপর নিজের হাতেই উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম সরফরাজের হাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। প্রতিবারের মতো এবারও তিনি ইলিশ মাছ প্রতীক চেয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সুধীর রঞ্জন দাবি করেন, তিনি এলাকায় একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবা করে আসছেন। প্যারালিসিস, স্ট্রোক আর বাতের মতো জটিল চিকিৎসায় তিনি বহু মানুষকে সুস্থ করেছেন। আর এ চিকিৎসা তিনি বিনা মূল্যে করেছেন।
সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস জানান, প্রয়াত স্ত্রী অঞ্জলির স্মৃতি রক্ষায় মৃত্যু অবধি তিনি এমপি নির্বাচন করে যাবেন। তিনি সব সময় মানুষের ও দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চান।
নির্বাহী সম্পাদক