সরকারের গৃহায়ন তহবিলের তালিকাভুক্ত এনজিও ৬১৬টি। বর্তমানে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে ১৭৬টি। বাকী ৪৪০টি এনজিও গৃহায়ন তহবিলের ঋণ বিতরণ বন্ধ করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর গৃহ সমস্যা সমাধানে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকার ঋণ বিতরণ শুরু হলেও বর্তমানে তা ৭০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়। কিন্তু গৃহ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গৃহঋণ প্রার্থীরা ৭০ হাজার টাকায় গৃহ নির্মাণে এখন আর তেমন আগ্রহী নন। এই জন্য ঋণের চাহিদা কমে গেছে। আবার এই প্রকল্প পরিচালনায় এনজিওগুলোর আর্থিক সুবিধা সন্তোষজনক নয়। তাই অনেক এনজিও ঋণ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে। আবার ঋণ গ্রহণ করে গৃহায়ন তহবিল ইউনিটের শর্তানুযায়ী ২ মাসের মধ্যে গৃহ নির্মাণে ব্যর্থ হওয়ায় অনেক এনজিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণও ফিরিয়ে দেয়।
বেসরকারী সংস্থা এসোসিয়েশন ফর আন্ডার প্রিভিলেজ্ড পিপল(আপ) এর নির্বাহী পরিচালক মো.মুজিবুল ইসলাম ফারুক বলেন, আমরা ২০০৫ সাল থেকে গৃহায়ন তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। তবে এই প্রকল্প তেমন লাভজনক নয়। আবার অনেকে ৭০ হাজার টাকায় ঘর বানাতে চায় না। তারা ১ থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ চায়। এ কারণে অনেক এনজিও এ ঋণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ঘরবাড়িবিহীন দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বসতঘর বানানোর জন্য ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গৃহায়ন তহবিল’ গঠন করেন। তহবিলের দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে স্টিয়ারিং কমিটি এই তহবিল তদারকি করে। এই তহবিল থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ সরল সুদে এনজিওকে ঋণ দেয়া হয়। এনজিওগুলো ৫ দশমিক ৫ শতাংশ সরল সুদে ঋণ বিতরণ করে। গেল বছরের জুন পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী এনজিওর মাধ্যমে ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন টাকা গৃহ নির্মাণ ঋণ হিসেবে অবমুক্ত হয়। ৪০৩টি উপজেলাকে উক্ত ঋণের আওতায় আনা হয় এবং এর মাধ্যমে ৬৭ হাজার ৮৮২টি গৃহ নির্মাণ করা হয়। তাছাড়া নতুন করে ১০২ টি এনজিও গৃহ নির্মাণের জন্য তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৭ সালের জুন শেষে আদায়যোগ্য মোট ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকার বিপরীতে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন টাকা আদায় হয়। আদায়ের হার ৯৬ দশমিক ৭ ভাগ।’