কিছুদিনের মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয় বিবেচনা করছে আওয়ামী লীগ। সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি আসনের বিষয়ে প্রাথমিকভাব দলটি বিভিন্ন এজেন্সী ও দলীয় রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে। জানার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে কার কী কন্ট্রিবিউশন আছে দলে। দলের বিষয়ে কার কী অবদান তাও গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে দলটি। বিশেষ একটি রাজনৈতিক সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনের ব্যাপারে নানারকম তথ্য রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে।”
প্রশ্ন উঠেছে, সুনামগঞ্জের এসব আসনে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোথাও কী কোনো শক্তিশালী প্রার্থী আছে? সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে, সারাদেশের মতো সেখানেও সকল প্রার্থীই ব্যস্ত জনসংযোগে। জেলার প্রার্থীদের মধ্যে সুনামগঞ্জ -৪ আসনে জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহকে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে গেছেন। সম্প্রতি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে তাঁকে ঘোষণা দিয়ে গেছেন তিনি। তবে এটা কারো কারো কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এই আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিউর রহমান আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। তিনি একজন শক্তিশালী প্রার্থী। জেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ও সভাপতি মতিউর রহমান একের পর এক গণসংযোগ করছেন। দল থেকে তিনি প্রার্থী হতে চান।”
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এখন নেই । তিনি প্রয়াত হলে তাঁর স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে উপ- নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এবার এই মওসুমে আগামী সংসদে এ আসনের নির্বাচনে প্রার্থীর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জয়া সেন প্রার্থী হতে চান। এ আসনে অপেক্ষাকৃত তরুণ ও গুণী মানুষকে প্রার্থী করতে চান এলাকাবাসী। এই আসনে তারা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দীপক চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী চান। জানা গেছে, লেখক হিসেবে তিনি দিরাই-শাল্লার মানুষের প্রিয়জন। তিনি ব্যাপক গণসংযোগ করছেন এলাকায়। দিরাই-শাল্লাবাসী মাটি ও মানুষের পক্ষের এই ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে আশা করেন”
অনেকেই বলেছেন, দিরাই-শাল্লায় জন্ম নিয়েছেন এমন এমপি প্রার্থী তারা চান। এখানকার তেলে-জলে বেড়ে ওঠা দীপক চৌধুরীই সাধারণ মানুষের দাবিগুলো বুঝবেন। অপরদিকে এবারের নির্বাচন সহজ ও স্বাভাবিক হবে এটা মনে করার কারণ নেই। স্থানীয়রা জানান, দীপক চৌধুরী এখানকার যোগ্য প্রার্থী। প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে এখানে আওয়ামী লীগকে সক্রিয় সতর্ক থাকতে হবে। সুতরাং এই আসন নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক হবে না, পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি দিরাই-শাল্লায় নেই। এটা মানুষ ঘৃণাভরে উচ্চারণ করে। এ আসনে বৃদ্ধ প্রার্থী নয়, তরুণ ও কর্মঠ এবং আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত ব্যক্তি দীপক চৌধুরীকে চান এলাকাবাসী। কেন্দ্রীয়ভাবে তার মনোনয়নের পাল্লা ভারী। মাঠ আওয়ামী লীগ থেকে এমপি জয়া সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে অযোগ্যতার অভিযোগ উঠেছে।
দিরাই শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলতাব হোসেন মাস্টারসহ তারা প্রচার করছেন, এই আসনে আওয়ামী লীগের এমপি জয়া সেনগুপ্ত অচল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ -১ আসনে নিরপেক্ষ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার মেয়াজ্জেম হোসেন রতনকে এলাকাবাসী পছন্দ করেন। তারা এই প্রার্থীর বিকল্প দেখছেন না। সূত্রমতে, সুনামগঞ্জ – ৫ আসনে মুহিবুর রহমান মানিককে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হসেবে মনোনয়ন দেবে। এটি প্রায় চূড়ান্ত। কারণ, তিনি তৃণমূল থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ। সুনামগঞ্জ -৩ এর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে এম এ মান্নান আর আজিজুস সামাদ ডনের নাম শোনা যাচ্ছে। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মান্নানের আচরণে আওয়ামী লীগের উচ্চমহল খুশি। তিনি আমলা থেকে রাজনীতিবিদ হলেও স্পষ্টবাদী মানুষ। সুনামগঞ্জের প্রতিটি আসনে নির্বাচনী প্রচারে সবাই সক্রিয় হলেও সরকারের অগ্রগতি ও উন্ময়ন প্রচারে অনেকের মধ্যে কৃপনতা দেখা যায়।”