তাঁর নামের পাশে একাধিক তকমা। তিনি টিভির জনপ্রিয় মুখ। লেখিকাও। একদা পত্নী সলমন রুশদির। সেই আমেরিকান টিভি স্টার পদ্মা লক্ষ্মী যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খুললেন।
যাঁর সঙ্গে ডেট করছিলেন, সে-ই ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ করলেন পদ্মা। নিউইয়র্ক টাইমসের জন্য কলম ধরে এমনই বিস্ফোরক হয়ে উঠলেন লক্ষ্মী।
‘টপ শেফ’-এর সঞ্চালক পদ্মা লিখেছেন, ৭ বছর বয়সে তাঁকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। আর ১৬ বছর বয়সে তিনি ধর্ষিতা। সে সময়ে লস এঞ্জেলেসের একটি শপিং মলে কাজ করতেন পদ্মা লক্ষ্মী। ২৩ বছরের এক জন কলেজ পড়ুয়া তাঁর সঙ্গে ফ্লার্ট করার চেষ্টা করতেন। সুন্দর আর ফুটফুটে ছেলেটাকে দেখে তাঁর সঙ্গে ডেট করতে শুরু করেন লক্ষ্মী।
স্মৃতির গলি থেকে লক্ষ্মী লিখছেন, ‘‘আমরা যখন ঘুরতে যেতাম ও গাড়ি পার্ক করে আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে আসত। কোনও দিনই দেরি করে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়নি। আমরা একটা পর্যায় অবধি ঘনিষ্ঠ ছিলাম। ও জানত, আমি ভার্জিন।’’
এক বর্ষবরণের রাতে ওই যুবকের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন পদ্মা লক্ষ্মী। ঘটনাটির বিবরণ দিতে গিয়ে লক্ষ্মী লিখেছেন, ‘‘অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় আমি ওঁর ফ্ল্যাটেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন সকালে তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে আমার ঘুম ভাঙে। মনে হচ্ছিল, কেউ যেন আমার দুই পায়ের মধ্যে দিয়ে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। সে আমার উপর শুয়ে ছিল। আমি জিজ্ঞেস করি, এটা কী করছ? সে বলেছিল, কিছু ক্ষণের জন্যই একটু ব্যথা অনুভব করবে।’’
কিন্তু ঘটনাটিকে ধর্ষণ নাকি সেক্স কী বলবেন, তা নিয়ে বহু দিন ধন্দে কাটিয়েছিলেন পদ্মা লক্ষ্মী। কিন্তু পরবর্তী প্রেমিকদের জানিয়েছিলেন, তিনি ভার্জিন। পদ্মার যুক্তি, ‘‘ইমোশনালি, আমি ভার্জিনই ছিলাম।’’
লক্ষ্মী আরও লিখেছেন, সাত বছর বয়সে এক বছরের জন্য তাঁকে ভারতে দাদু ঠাকুমার কাছে পাঠান হয়েছিল। আর সেখানে ঘটেছিল আর এক কাণ্ড। একটু অশালীন ভঙ্গিতেই তাঁকে স্পর্শ করেছিলেন এক ব্যক্তি। এমনকি, লক্ষ্মীকে ওই ব্যক্তির যৌনাঙ্গেও হাত দিতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। বিষয়টি মা এবং সৎ বাবাকে এসেও জানিয়ে ছিলেন লক্ষ্মী। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি।
কিন্তু এতদিন কেন চুপ ছিলেন?
লক্ষ্মীর বক্তব্য, ‘‘এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনে তীব্রভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আর এখন আমার মনে হয়, ধর্ষককে আমি ছেড়েই দিয়েছিলাম।’’
লক্ষ্মী লিখেছেন, এ সব নিয়ে এখন আর কথা বলে কোনও লাভ নেই। কিন্তু ধর্ষিতা যে হয়েছেন সেটা যদি আগেই স্বীকার করে নিতেন তাতে তাঁকেই কষ্ট কম পেতে হত— সে কথাও বলতে ভোলেননি পদ্মা লক্ষ্মী। তার থেকেও কম কষ্ট পেতেন, যদি বিষয়টা অন্যদের সঙ্গেও শেয়ার করতেন।
নির্বাহী সম্পাদক