শুদ্ধবার্তাটুয়েন্টিফোর: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) ৯নং ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এ কেন্দ্র দুটি হচ্ছে সিলেট ইনক্লুসিভ স্কুল (এতিম স্কুল) এবং পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়।মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান তিনি। এ কেন্দ্র দুটিতে ‘জবরদখল, সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতি’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন নজরুল ইসলাম বাবুল। সিসিকের ৯নং ওয়ার্ডে রেডিও প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবুল। তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন ঠেলাগাড়ি প্রতীকের মখলিছুর রহমান কামরান। নির্বাচনে বেসরকারিভাবে কামরান বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘সিসিকের ৯নং ওয়ার্ডের সিলেট ইনক্লুসিভ স্কুল (এতিম স্কুল) ভোট কেন্দ্রটি ২৯ জুলাই রাতের আধারে দখল করে নেন ঠেলাগাড়ি মার্কার কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মখলিছুর রহমান কামরান। তিনি নিজে ও তাঁর লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কেন্দ্র দখল করে ব্যালট সিল মেরে ভোটবাক্স ভর্তি করেন। এর প্রতিবাদ করায় রাতেই এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তাঁর লালিত বাহিনী। তারা এলাকার লোকজনকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বেআইনী আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণ করে। এতিম স্কুল এলাকার জনৈক এম ডি খানের ছেলে মাহমুদ, কাউন্সিলর প্রার্থী মখলিছুর রহমান কামরানের গরু ফার্মের ম্যানেজার মিজান, গাড়িচালক বশির, আরজান ও রাজনের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত সশস্ত্র লোক এতিম স্কুল কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি ও নিরীহ ভোটারদের উপর হামলা চালায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা আউয়াল মেম্বারের বাসায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে টিভি মোটরসাইকেল, সোফা সেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর, লুটপাট করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অজ্ঞাত কারণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে কেন্দ্র দখলকারীরা তাদের ইচ্ছেমতো মখলিছুর রহমান কামরানের প্রতীক ঠেলাগাড়ি মার্কায় আগাম ভোট কাস্ট করে। পরদিন ৩০ জুলাই এই কেন্দ্রে নামমাত্র ভোটগ্রহণ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এসময় আমার অনেক এজেন্টদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করতেও দেয়া হয়নি। ফলে এতিম স্কুল ভোটকেন্দ্রে ভোট ডাকাতরা তাদের সমর্থিত প্রার্থীর ঠেলাগাড়ি মার্কায় ১১১৭ ভোট আগাম কাস্ট করে নেয়। আমার সমর্থকরা রেডিও মার্কায় মাত্র ৯৩৪ ভোট দেওয়ার পর আর কেউ ভোট দিতে ব্যালট পেপার পাননি। ফলে যথাযথ ভোটপ্রাপ্তি থেকে আমার রেডিও প্রতীক বঞ্চিত হয়েছে।’
৯নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও কাউন্সিলর প্রার্থী মখলিছুর রহমান কামরানের ‘সন্ত্রাসীরা দখলবাজি ও ভোট ডাকাতিসহ ব্যাপক তান্ডব চালায়’ বলে দাবি করেছেন নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ার্ডের আখালিয়া এলাকার ফরহাদ বক্স, কাউন্সিলর প্রার্থী মখলিছুর রহমান কামরানের ভাই কামাল, কবির, ইকবালসহ প্রায় অর্ধশত সন্ত্রাসী ওই ভোট কেন্দ্র দখল করে নেয়। তারা আমার রেডিও মার্কার ১৩ জন পোলিং এজেন্টকে অস্ত্রের মুখে বের করে দিয়ে ভোট ডাকাতি করে। বিষয়টি ৯নং ওয়ার্ডের নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদারকে বার বার অবগত করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। ফলে ওই কেন্দ্রে ভোট ডাকাতরা ঠেলাগাড়ি মার্কায় ১৫৭৫ ভোট টেবিল কাস্ট করে নেয়। আমার রেডিও সমর্থকরা ৫৬৯ ভোট দেয়ার পর ভোট দিতে গিয়ে আর কোন ব্যালটই পাননি।’
সিসিকের ৯নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মখলিছুর রহমান কামরান ‘কেন্দ্র দখল, সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতির মাধ্যমে’ বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেন নজরুল ইসলাম বাবুল। উপরোক্ত দুই কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ হয়নি বলেও দাবি তার। এজন্য নজরুল ইসলাম বাবুল ওই দুই কেন্দ্রে কাউন্সিলর পদের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পুনরায় ভোট গ্রহণ হলে তিনি বিজয়ী হবেন বলেও উল্লেখ করেন বাবুল।