Home » সিলেটে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকরা বিপাকে

সিলেটে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকরা বিপাকে

 

শুদ্ধবার্তাটুয়েন্টিফোর: সিলেটে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা প্রি-পেইড মিটার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গ্রাহকদেরকে অন্ধকারে রেখে  প্রি-পেইড সিস্টেম চালু করে বিদ্যুৎ অফিস গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন। একদিকে বিদ্যুতের গ্রাহকদের ‘প্রি-পেইড মিটারের’ প্রতি অধিকাংশ গ্রাহকের অনাগ্রহ। অপরদিকে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই প্রি-পেইড মিটার। গ্রাহককের প্রতিটি সিঙ্গেল ফেজ মিটারের জন্য প্রতি মাসে ৪০ টাকা এবং থ্রিফেজ মিটারের জন্য ২৫০ টাকা বিদ্যুৎ বিলের সাথে কেটে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে প্রথমে গ্রাহকদেরকে ফ্রি মিটার দেয়া হলেও ২/৩ মাস যেতে না যেতেই মিটারের দাম নেয়ার ঘোষণা দেয়া হবে বলে সিলেট বিদ্যুৎ অফিস সুত্রে জানা গেছে। যেসব গ্রাহকরা ইতিমধ্যে প্রি-পেইড মিটার লাগিয়েছেন সেসব গ্রাহকরা আগামী মাস থেকেই সিঙ্গেল ফেজ মিটারের একজন গ্রাহক তার মিটার ক্রয় বাবদ (প্রতি মাসে একবার) ৪০ টাকা এবং থ্রি-ফেজ মিটারের জন্য ২৫০ টাকা বিদ্যুৎ বিলের সাথে প্রদান করবেন। একজন গ্রাহককে মিটারের মুল্য বাবদ প্রতি মাসে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। গ্রাহকরা বলছেন, প্রি-পেইড মিটারে ‘পোস্টপেইড’ যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। একদিকে চায়না প্রি-পেইড মিটার নিয়ে বিপাকে আছেন গ্রাহকরা। তার ওপর লোডের বিষয় নিয়েও আছে চরম বিপত্তি। এরই মাঝে প্রতি মাসে আবার বিলের সাথে যুক্ত হচ্ছে মিটারের ভাড়া। গ্রাহকদের অভিযোগ, কোন ধরনের পরিকল্পনা ছাড়াই মনে হচ্ছে সরকার প্রি-পেইড মিটার লাগানো শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, মিটারের মূল্য পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু কোন মিটার যদি নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে একজন গ্রাহক আবার নতুন মিটার নিলে তার ক্ষেত্রে মূল্য পরিশোধের বিধান কী রকম হবে, এসব বিষয়ে কোন ধরনের প্রচারণা নেই সংশ্লিষ্টদের। গ্রাহকদের অন্ধকারে রেখে এ সিস্টেম চালু করে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভে ফুসছেন। নগরীর টিলাগড় রাজপাড়া এলাকার প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহক ছমর উদ্দিন মানিক বলেন, ‘আমাদেরতো মিটার ছিল। আমরা একবার টাকা দিয়ে মিটার এনেছি। এখন সরকার প্রি-পেইড সিস্টেম চালু করতে গিয়ে আমাদের আগের মিটারটি খুলে নিয়েছে। তাহলে আমরা আবার কেন মিটারের জন্য টাকা দেব। প্রি-পেইড মিটার লাগানোর সময় তখন মিটারের টাকার কথা বলেনি। তাহলে ২/৩ মাস পরে এসে কেন মিটারের টাকা দিতে বলছে তা বোধগম্য নয়। তিনি জানান, মিটার লাগানোর সময় ২০ ইউনিট ফ্রি দেয়া হচ্ছে বলে গ্রাহকদের ঠকানো হচ্ছে। প্রথমে ফ্রি দিলেও পরে কার্ড আনতে গেলে ২০ ইউনিট কেটে আপনাকে দিবে ৮০ ইউনিট এবং সেই সাথে কাটবে ৫% ভ্যাট। শাপলাবাগ, টিলাগড়, শিবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহকরা জানান, ‘প্রি-পেইড মিটার নিয়ে নানান ঝামেলায় আছি। বাড়তি কোন লোড দেয়া যায় না। আমাদের পুরনো মিটারটি খুলে যখন নতুন প্রি-পেইড মিটার লাগানো হয়েছিল তখন বলেছিল মিটারের জন্য কোন মূল্য নেয়া হবে না। এখন দেখছি প্রতি মাসে রিচার্জকৃত টাকা থেকে মিটারের ভাড়া কেটে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে পিডিবি। এ যেন ‘পোস্টপেইড’ যন্ত্রণা।’ তবে অধিকাংশ গ্রাহক এখনও বিষয়টা পরিপূর্ণভাবে জানেনা বলে জানান তারা। ফ্রি-মিটার ক্রয় বাবত প্রতি মাসে মাসের রিচার্জকালে কর্তনের বিষয়টি অযৌক্তিক দাবি বলে উল্লেখ করেছেন সিলেট নগরীর বাসিন্দারা। সবাই বলেন, প্রতি মাসে প্রি-পেইড মিটারের ভাড়া নেয়ার কথা আগে বলেনি। এটা সাধারণ গ্রাহকদের জন্য বাড়তি বোঝা হবে। প্রতি মাসের রিচার্জকৃত টাকা থেকে মিটারের ভাড়া কেটে নেয়ার সিদ্ধান্তটি কোন অবস্থাতেই যৌক্তিক হবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, একটি প্রি-পেইড মিটার ক্রয়ে আমাদের খবচ পড়েছে ৪৮ ডলার। সেই সাথে ৩০ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হয়েছে। সে হিসেবে একজন সিঙ্গেল ফেজ মিটারের গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতিমাসে মিটারের জন্য ৪০ টাকা এবং থ্রি-ফেজ মিটারের জন্য ২৫০ টাকা বিদ্যুৎ বিলের সাথে প্রদান করতে হবে। যা গ্রাহেকদের মাসিক রিচার্জকৃত টাকা হতে কেটে নেয়া হবে। পিডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুতের গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার লাগানোর সময় আমরা মিটার ফ্রি দিয়েছি। তবে এখন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিদ্যুতের মাসিক বিলের সাথে মিটারের টাকা আদায়ের জন্য। তাই আগামী মাস থেকে গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের মূল্য মাসিক বিলের সাথে প্রদান করতে হবে। এমনিতেই একটি প্রি-পেইড মিটারের মেয়াদ ১০ বছর। আর এ ১০ বছরের মধ্যে মিটারটি নষ্ট হলে আমরা আবার নতুন মিটার লাগিয়ে দিব বলে তিনি জানান। তাহলে গ্রাহকদের প্রশ্ন আগের মিটার যেটা খুলে নিয়ে গেল সেটার কি হবে ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *