তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। শনিবার রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় মাশরাফি বাহিনী। নয় বছর পর এটি বিদেশের মাটিতে প্রথম কোনও ওয়ানডে সিরিজ জয় বাংলাদেশের। শুরুতে ব্যাট করে ছয় উইকেটে ৩০১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেমেছে ছয় উইকেটে ২৮৩ রান করে।’
বাংলাদেশের ছূঁড়ে দেয়া ৩০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্রিস গেইল, শাই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল তিনজন হাফসেঞ্চুরি করেন। তাতেও কাজের কাজ হয়নি। এভিন লুইস ও ক্রিস গেইলের ওপেনিং জুটি ভাঙে ৫৩ রানে। এ সময় মাশরাফির বলে লুইস আউট হন ৩৩ বল থেকে মাত্র ১৩ রান করে। এরপর গেইল-হোপের জুটি ভাঙে ১০৫ রানে। এ সময় গেইল ফিরেন রুবেলের বলে। তার আগেই ৬৬ বলে ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কার মারে করেন গেইল করেন ৭৩ রান। ”
এরপর হেটমায়ের-হোপের জুটি দলকে নিয়ে যান ১৭২ রান পর্যন্ত। ৩০ রান করা হেটমায়ের এ সময় মাশরাফির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। এর পরপরই কাইরন পাওয়েল রান আউট হয়ে যান। পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রোভম্যান পাওয়েল ও শাই হোপ দুর্দান্ত ব্যাট করলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে দলকে নিয়ে যেতে পারেননি। ৯৪ বল থেকে ৫টি চারের মারে ৬৪ রান করেন হোপ। অপরদিকে পাওয়েল ৪১ বল থেকে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার মারে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন পাওয়েল। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মাশরাফি দুটি উইকেট নেন। এছাড়া রুবেল, মিরাজ ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম-মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে শেষ ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ছয় উইকেটে ৩০১ রান করেছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করেছেন তামিম এবং আর ৪৯ বলে ৬৭ রানের হার নামা এক ইনিংস খেলেছেন রিয়াদ।’
তামিম ও বিজয় বাংলাদেশের ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে সতর্ক সূচনা করেও বেশিদূর যেতে পারেননি। দশম ওভারের তৃতীয় বলে এসে দলীয় ৩৫ রানে আউট হয়ে যান বিজয়। হোল্ডারের বলে আউট হওয়ার আগে ৩১ বল থেকে মাত্র ১০ রান করেছেন তিনি।
এরপর তামিম-সাকিব জুটি বাঁধেন। দ্বিতীয় উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ৮১ রান। সেই সুবাদে মন্থর সূচনা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২৫ ওভারে ১১ রান করে বড় স্কোরের আভাস দিচ্ছিল। ঠিক এমন সময়ই ২৬তম ওভারে হতাশ করেন সাকিব। দলীয় ১১৬ রানে নার্সের বলে পলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে ৪৪ বল থেকে তিনটি চারের মারে সাকিব করেছেন ৩৭ রান।
সাকিব আউট হওয়ার পর তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন। এরপর ১২ রান করে মুশফিক আউট হয়ে যান। পরে তামিমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ। তিনজন সঙ্গী একপাশ থেকে বিদায় নিলেও সেঞ্চুরি করেই মাঠ ছেড়েছেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১০৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। ‘
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে করেছিলেন হাফসেঞ্চুরি। এরপর দ্বিতীয়টিতে ১৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার তৃতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরি করলেন এই মারকুটে ওপেনার। এদিন ১২৪ বল থেকে সাতটি চার ও দুটি ছক্কার মারে তামিম করেন ১০৩ রান। এটি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তামিমের ১১তম সেঞ্চুরি। তামিম যখন আউট হন তখন ৩৮.৫ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় ২০০ রান।
এরপর পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন ও মাশরাফি। পঞ্চম উইকেটে এই দুজন করেছেন আরও ৫৩ রান। দলীয় ২৫৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মাশরাফি। আউট হওয়ার আগে ২৫ বল থেকে চারটি চার ও একটি ছক্কার মারে করেন ৩৬ রান। এরপর মাঠে নেমে ৯ বল থেকে ১২ রান করে আউট হন সাব্বির। সবশেষ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে ৩০১ রান সংগ্রহ করে মাঠ ছাড়েন রিয়াদ। ৪৯ বল থেকে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার মারে ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন রিয়াদ। আর সৈকত অপরাজিত থাকেন ৫ বল থেকে ১১ রান নিয়ে। ‘
ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে অ্যাশলে নার্স ও জেসন হোল্ডার দুটি করে উইকেট নেন। ‘
চলতি সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এখন বাংলাদেশ দল স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। আগামী ১ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে হবে এসব ম্যাচ। ”