রাখাইন থেকে সংঘাতের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য সামাজিক-অর্থনৈতিকসহ সব বিষয়ে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।’
সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক-পরবর্তী এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পাদিত চুক্তির বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন সংস্থা ও বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক উন্নয়নেরও তাগিদ দেওয়া হয়। আগামীতে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপরে সেনা নিপীড়নের ঘটনা ঘটবে না, এ ব্যাপারেও নিশ্চয়তার কথা বলা হয় বিবৃতিতে।”
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিনা শ্রেনার বার্গেনার রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুটি নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করেন। সম্প্রতি একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে দুই মাসের করা সফরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, মিয়ানমারের নেতারা চান রোহিঙ্গারা পুনরায় রাখাইনে ফিরে যাক। কিন্তু সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের দ্বন্দ্বের কারণে এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে।’
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। এ ছাড়া রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের স্বচ্ছ এবং স্বাধীন তদন্তের ওপর পুনরায় জোর দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারকে কঠিন চাপের মুখে রাখতে চাইলেও মিয়ানমারের মিত্র চীনের আপত্তির মুখে বিভিন্ন সময় সে উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। ফলে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় চীনকে কার্যকরী ভূমিকায় আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে একমত হন বৈঠকে উপস্থিত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা।’
এদিকে, এ বিবৃতির বেশির ভাগটাই মিথ্যা অভিযোগপ্রসূত বলে সমালোচনা করেছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাও দু সুয়ান। তিনি বলেন, রাখাইন সমস্যা মোকাবিলায় মিয়ানমার সরকারের অবস্থান চিহ্নিত করতে এটি ব্যর্থ হয়েছে।’
বাংলাদেশ নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গাদের অনিরাপত্তা ও দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদ যে আন্তরিক ও কাজ করে যাচ্ছে, এই বিবৃতি পুনর্বার তা নিশ্চিত করে।’
আগামী মাসের শেষ নাগাদ রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে একটি উন্মুক্ত সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।’