Home » স্ক্যান করতে ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরকে চিঠি দেবে জেলা প্রশাসন

স্ক্যান করতে ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরকে চিঠি দেবে জেলা প্রশাসন

 

ডেস্ক নিউজ: রাজধানীর মিরপুর ১০–এর একটি বাড়িতে গুপ্তধন আছে বলে আবু তৈয়ব নামে টেকনাফের যে ব্যক্তি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন, তিনি এখন আর পুলিশের কাছে ধরা দিচ্ছেন না। কয়েক দফা তাঁকে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি মিরপুর থানায় আসছেন না। ওই ব্যক্তিকে হাজির করতে মিরপুর থানার পুলিশ এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। এদিকে ওই বাড়িতে আদৌ গুপ্তধন আছে কি না, তা জানতে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাড়িটি বর্তমান অবস্থায় থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর ১০ নম্বরের সি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা সেখানে পাহারা দিচ্ছেন। তাঁরা জানালেন, প্রতিদিনই অনেক মানুষ এই বাড়িটিকে এক নজর দেখার জন্য আসছেন। একজন পুলিশ সদস্য জানালেন, আজ সকালে বেশ কয়েকজন বাড়ির সামনে এসেছেন। তবে কাউকেই বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বলেন, ওই বাড়িতে গুপ্তধন আছে—এই মর্মে এই মাসের ১০ তারিখ সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন টেকনাফের বাসিন্দা আবু তৈয়ব। পরে বাড়ির মালিক মনিরুল আলমও সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বাড়িটি খোঁড়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করি। কিন্তু শুরু থেকে বাড়ির মালিক মনিরুল সহায়তা করলেও আবু তৈয়ব আমাদের সহযোগিতা করছেন না। তিনি দেখাই করেননি আমাদের সঙ্গে। কয়েকবার তাঁর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। তাঁকে আসতে বললেও তিনি আসেননি। তৈয়ব বলছেন, ‘আমি আসব.. আসতেছি…বললেও এখনো আসেননি তিনি।’ গুপ্তধনের বিষয়টি তদারক করছেন মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আরিফুর রহমান সরদার। তিনি আজ  বলেন, ‘তৈয়ব নামের ওই ব্যক্তি আমাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না। তাঁর তথ্য আমরা আমাদের গণমাধ্যম শাখায় দিয়েছি। এখন তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাড়ির মালিক মনিরুল আলম বলেন, ‘আমি পুলিশকে সাধ্যমতো সহায়তা করেছি। ওই ব্যক্তি কেন দেখা দিচ্ছেন না বা সহায়তা করছেন না, তা আমি বলতে পারব না।’ অবশ্য বাড়িটিতে গুপ্তধন আছে কি না, তা প্রাথমিক খোঁড়াখুঁড়ি পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে ঢাকা জেলা প্রশাসক এখন বাড়িতে গুপ্তধন আছে কি না, তা জানার জন্য ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজোয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, ‘আমরা সামনের সপ্তাহে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরকে চিঠি দেব। তাঁদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ গুপ্তধন খোঁজার বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) কী করতে পারে, জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির একজন বিজ্ঞানী বলেছিলেন, বাপেক্স তার অনুসন্ধানের মাধ্যমে মাটির নিচে তেল বা গ্যাস আছে কি না, সেটা বের করতে পারে। কিন্তু ধাতব দ্রব্য আছে কি না, তা নির্ণয় করতে পারে না। এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের কাছে থাকতে পারে। তারা এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকাল ১০টা থেকে মিরপুর ১০-এর সি ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর বাড়িতে গুপ্তধনের সন্ধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামানসহ মিরপুর থানা-পুলিশের উপস্থিতিতে মাটি খননকাজ শুরু করেন ২০ জন শ্রমিক। টিনশেডের ওই বাড়ির সাতটি কক্ষের মধ্যে দুটি কক্ষের প্রায় চার ফুট গভীর পর্যন্ত শাবল, কোদাল দিয়ে খনন করেন তাঁরা। কিন্তু ছয় ঘণ্টার খননকাজ চলার পর সেখান থেকে গুপ্তধন বা মূল্যবান কোনো বস্তু পাওয়া যায়নি। ওই বাড়ির মালিক মনিরুল আলম ২০১০ সালে সেলিম রেজা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাড়িটি কিনেছিলেন। বাড়ির দেখাশোনার জন্য দুজন তত্ত্বাবধায়ক রাখা হয়। এ ছাড়া বাড়িটির কয়েকটি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়। সম্প্রতি বাড়িটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু হবে জানিয়ে ভাড়াটেদের চলে যেতে বলা হয়। এরপর ১২ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টার দিকে দুজন লোক বাড়িটিতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাঁরা তত্ত্বাবধায়কদের ঢোকার জন্য আর্থিক প্রলোভনও দেখান। পরে তাঁরা এই বাড়ির মাটির নিচে গুপ্তধন রয়েছে বলে জানান। তাঁদের মধ্যে আবু তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি ছিলেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *