Home » পরস্পরবিরোধী অবস্থানে- কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও শুল্ক গোয়েন্দা

পরস্পরবিরোধী অবস্থানে- কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও শুল্ক গোয়েন্দা

জব্দকৃত স্বর্ণের হিসাব ও পরিমাপে গরমিল হয়েছে বলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা অস্বীকার করছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, জব্দকৃত স্বর্ণের পরিমাপে কোন ব্যতিক্রম হয়নি। তবে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিমাণে গরমিল হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শুধু তাই নয়, ওই যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষরও রয়েছে।”
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে রক্ষিত স্বর্ণের হিসাবে গরমিল হতে পারে – এমন আশঙ্কার কথা এর আগেও আলোচনায় এসেছিল। বহুল আলোচিত আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ আটকের পর ইস্যুটি সামনে আসে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আপন জুয়েলার্সসহ অনেক আলোচিত প্রতিষ্ঠানের জব্দকৃত স্বর্ণও এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে। এসব স্বর্ণের প্রকৃত পরিমাপ বা একই স্বর্ণ এখন অক্ষত রয়েছে কি না – তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।”
সূত্র জানায়, গত বছর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ আটকের পর তা সঠিক পরিমাণে মেপে বুঝে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেয়। কোন অঘটন ঘটলে দায় কে নেবে – সে আশঙ্কার কথাও জানানো হয়। এমন আলোচনার মধ্যেই গত বছর একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে স্বর্ণের পরিমাপ করা হয়।”
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কমিটি যে প্রতিবেদন তৈরি করে তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে। ফলে ওই প্রতিবেদন অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সহিদুল ইসলাম গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, এই ধরণের একটি প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে বলে শুনেছি। এটি এনবিআর হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও পাঠানো হয়েছিল। তবে এ প্রতিবেদন তৈরি হওয়ার পরে আমি এ দপ্তরে যোগদান করেছি। ফলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে নেই।”
গত বছরের ৪ জুন ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের ৫টি শো রুম থেকে ১৫.১৩ মণ স্বর্ণালঙ্কার, ৭ হাজার ৩৬৯ পিস ও ৩৭৮ জোড়া ডায়মন্ডের অলঙ্কার আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। আটককৃত ওই স্বর্ণ পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহানিরাপত্তা এলাকায় ৫টি ট্রাঙ্কে সিলগালা করে ভল্ট অফিসারের কাছে জমা দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, ওই স্বর্ণ পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে যথাযথ নিয়মে বিস্তারিত যাচাই বাছাই করে জমা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দফা চিঠি চালাচালির পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক কেবল সিলগালাযুক্ত ৫টি ট্রাঙ্ক বুঝে নিয়েছে। এর মধ্যে কী মানের কতটুকু স্বর্ণ আছে, তা বিস্তারিত হিসাব করে বুঝে নেওয়া হয়নি বলে ওই সময় শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়।”

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *