Home » দেশেই তৈরি হবে বিশ্বখ্যাত কোম্পানির ল্যাপটপ

দেশেই তৈরি হবে বিশ্বখ্যাত কোম্পানির ল্যাপটপ

ডেস্ক নিউজ:

  আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কয়েকটি ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কারখানা নির্মাণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে এদেশে কারখানা স্থাপন, প্রযুক্তিপণ্য সংযোজন, বিপণন, রফতানিসহ আরও কী কী সুবিধা দেওয়া যায় সে বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে জায়গাও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড স্যামসাং, হুয়াওয়ে, ডেল, এইচপি ও লেনোভোর মতো পাঁচটি কোম্পানিকে টার্গেট করে প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। প্রস্তবনায় বাংলাদেশে কারখানা করলে ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার ও দেশের প্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের (প্রযুক্তিপণ্যর আমদানিকারক, পরিবেশক) কাছ থেকে কী সুবিধা পাবে সেসবও উল্লেখ করা হবে। চীনের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে এরই মধ্যে কারখানা স্থাপনের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে ৭ একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে। তবে কারখানার তৈরির বিষয়ে এখনও দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি হয়নি। এছাড়া দেশীয় উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা নরসিংদীর শিবপুরে স্থাপন করা হয়েছে স্যামসাংয়ের কারখানা। প্রাথমিকভাবে এই কারখানায় ফোর-জি স্মার্টফোন তৈরি হলেও ভবিষ্যতে ল্যাপটপ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। স্যামসাংয়ের এই কারখানায় অন্যান্য ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ তৈরি করা হতে পারে-এমন আয়োজনও থাকছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যেসব আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বাংলাদেশে ল্যাপটপ তৈরির কারখানা স্থাপন করতে চায় তাদের স্বাগত জানাই। আমরা সেই পরিবশে তৈরি করে দিয়েছি। ওই বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের কাছে কারখানা স্থাপনের জন্য স্থানীয় আইন ও নিয়ম মেনে যে ধরনের যৌক্তিক সুবিধা চাইবে তা আমরা দেবো। হাইটেক পার্কে কারখানা স্থাপন করলে পার্কের যাবতীয় সুযোগ সুবিধাও নির্মাতারা পাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আন্তর্জাতিক ল্যাপটপ ব্র্যান্ডগুলো কারখানা স্থাপন করলে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা, ১০ শতাংশ ক্যাশ ইনসেনটিভও (রফতানিতে আর্থিক প্রণোদনা) পাবে। এ দেশে কারখানা তৈরি করলেই যে শুধু এখানেই ল্যাপটপ বিক্রি করতে হবে এমন নিয়ম থাকা ঠিক হবে না। তারা যেন এ দেশ থেকে কমদামে ল্যাপটপ তৈরি করে বিশ্বের অন্যান্য দেশে রফতানি করতে পারে সেই সুযোগটাও থাকা উচিত।’ মোস্তাফা জব্বার বলেন, “এদেশে কারখানা তৈরি হলে কম দামে মানুষ ল্যাপটপ পাবে, কর্মসংস্থান হবে, উন্নত প্রযুক্তি দ্রুতই দেশে আসবে। বিনিয়োগসহ আরও অনেক কিছুই আসবে। তখন দেশ পরিচিতি পাবে প্রযুক্তি পণ্যের হাব হিসেবে। আর এরমধ্য দিয়ে দেশ বিশ্বে পরিচিতি পাবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নামে।” মন্ত্রী এ দেশকে উৎপাদক হিসেবে দেখতে চান উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশ কম্পিউটর সমিতিকে (বিসিএস) বলে আসছি আর কতদিন তোমরা প্রযুক্তি পণ্য বিক্রি করবা,আমদানি করবা? কেন তোমরা উৎপাদনে যাচ্ছো না? ব্যবসায়ীরা যদি নির্মাতাদের নিয়ে আসতে পারে সেটা দেশের জন্য খুবই ইতিবাচক একটা বিষয় হবে।’    সংশ্লিষ্টরা জানালেন, ল্যাপটপ তৈরির কথা বলা হলেও মূলত এখানে যন্ত্রাংশের (ল্যাপটপের) সংযোজন হবে। তবে ভবিষ্যতে পুরো ল্যাপটপটিই যেন বাংলাদেশে তৈরি হতে পারে সেসব উদ্যোগও সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে।  দেশের প্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিএস’র সভাপতি সুব্রত সরকার বলেন, ‘আমরা অন্তত ৫টি ব্র্যান্ডকে (স্যামসাং, হুয়াওয়ে, ডেল, এইচপি ও লেনোভো) এদেশে কারখানা স্থাপনের পক্ষে প্রস্তাবনা পাঠাবো শিগগিরই। এদের মধ্যে কয়েকটির কাছ থেকে আগেই ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। ওই সাড়ার ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এদেশে স্যামসাং কারখানা স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেক্ট্রনিকস এরই মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক ল্যাপটপ ব্র্যান্ডের এ দেশীয় (কান্ট্রি অফিস) অফিসের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ করেছে। ওই ব্র্যান্ড আগ্রহী স্যামসাংয়ের কারখানায় ল্যাপটপ তৈরিতে। ল্যাপটপ নির্মাতাদের (মূল প্রতিষ্ঠান) কাছ থেকে সাড়া পেলে এ বিষয়ে অগ্রগতি হবে বলে জানা গেছে। আরেকটি ব্র্যান্ডের এ দেশীয় অফিসের সঙ্গে শিগগিরই প্রাথমিক কথা শুরু হবে বলে ফেয়ার ইলেক্ট্রনিকস সূত্রে জানা গেছে।

 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *