ডেস্ক নিউজ:
আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগের মধ্য দিয়েই বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র পদপ্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আবারও সংশয় প্রকাশ করেছেন। এছাড়া প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণসহ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মেয়র পদপ্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুজিবুর রহমার বলেছেন, ‘সব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’ অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়েই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে প্রার্থীদের গণসংযোগ-পথসভাসহ নানা কার্যক্রম। বেলা ২টার পর থেকে প্রার্থীদের পক্ষে চলে মাইকে প্রচার-প্রচার-প্রচরণার কাজ। বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত দিনের ভোটের পরিসংখ্যান বলছে বরিশাল বিএনপি ঘাঁটি। অথচ বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’ শনিবার গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর মর্যদাপ্রাপ্ত আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পতাকাবাহী গাড়ি নিয়ে ছেলে সাদিক আবদুল্লার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় তার নির্বাচনি ক্যাম্পে কর্মী সমাবেশে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। কাশীপুরে ওয়ার্ড জামাত নেতাকে গ্রেফতার করে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে।’
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয় মনিটরিংয়ের জন্য বিএনপির উপ-কমিটির প্রধান নাজিমুদ্দীন আহমেদ পান্না জানান, এসব বিষয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ করেছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগ করা বিএনপির স্বভাব। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে না। তার বাবা বরিশালের ভোটার ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি কোথাও প্রকাশ্যে কোনও সভা-সমাবশে করেননি। কিংবা আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো কোনও ঘটনাও ঘটাননি।’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব বলেছেন, সাংবাদিকরা প্রকৃত চিত্র তুলে ধরলে শঙ্কা দূর হতে পারে। সুষ্ঠু ভোট হলে হাতপাখা মার্কার বিজয় হবে। গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাদিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চান। গত কয়েক দিনের প্রচারে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়ে সাদিক বলেন, ‘কোনও এলাকায় নির্দিষ্ট কোনও দলের ঘাঁটি বলে কিছু নেই। আওয়ামী লীগও সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে একজন যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পক্ষে কথা বলে। আওয়ামী লীগের কোনও নেতাকর্মী বিরোধী কোনও প্রার্থীর কর্মী সমর্থককে হুমকি-ধমকি দিলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এদিকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত করাসহ আধুনিক ব্যবস্থাপনায় রাতের মধ্যে বর্জ্য অপসারণসহ ২৪ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। এছাড়াও ইশতেহারে ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ করে বরিশালকে নান্দনিক সিটি হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বিসিসি নির্বাচনে একমাত্র নারী মেয়র প্রার্থী বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী শনিবার সকালে আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে নিবাচনি কর্মীসভা ও বিকালে গণসংযোগ করেন।
সিপিবি’র মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী জাপা) প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনুও শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান