বেলজিয়ামের দুর্দান্ত যাত্রা থেমে গেল ফ্রান্সের কাছে। সব ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে খেলতে নামা বেলজিয়ানদের ১-০ গোলে হারাল ফরাসিরা। তাতে বিশ্বকাপ ইতিহাসে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠল তারা।’
বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া ও হুগো লরিসের নৈপুণ্যে প্রথমার্ধে জালে বল জড়াতে পারেনি কেউই। সেন্ট পিটার্সবার্গে মঙ্গলবারের সেমিফাইনালের প্রথম ৪৫ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্য থেকে। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্যামুয়েল উমতিতির গোলে এগিয়ে গেছে ফ্রান্স।’
সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম সেমি ফাইনালে বেলজিয়াম ও ফ্রান্স মুখোমুখি হয় । ফ্রান্স বল দখল হারালে ১৫ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইন পায়ে নেন। তারপর ইডেন হ্যাজার্ডকে দেন পাস। বেলজিয়ান অধিনায়কের নিচু শট গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়।’
১৮ মিনিটে ফ্রান্স প্রথমবার গোলমুখে শট নেয়। ব্লেইস মাতুইদির শক্তিশালী শট কোর্তোয়াকে পরাস্ত করতে পারেনি। পরের মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে শক্তিশালী শট নেন গোলে, কিন্তু রাফায়েল ভারানের গায়ে লেগে গোলবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে যায়। ২১ মিনিটে নাসের চ্যাডলির কর্নার থেকে অ্যাল্ডারওয়েইরেল্ড পরীক্ষা নেন লরিসের। টটেনহ্যাম সতীর্থের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন ফরাসি গোলরক্ষক।
৩১ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বল নিয়ে পাভার্দ বক্সের মধ্যে ক্রস দেন। অলিভিয়ের জিরুদের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পর আন্তোয়ান গ্রিয়েজমানের নিখুঁত ফ্রি কিক বেলজিয়ান রক্ষণদেয়াল ভেদ করে বক্সে জায়গা করে নেয়। কিলিয়ান এমবাপে পাস দেন জিরুদকে। চেলসি ফরোয়ার্ডের দুর্বল ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ায়নি।’
বিরতির ৬ মিনিট আগে দারুণ এক সুযোগ পায় ফ্রান্স। ৩৯ মিনিটে এমবাপের পাস থেকে বেঞ্জামিন পাভার্দ লক্ষ্যে শট নিয়েছিলেন, কিন্তু কোর্তোয়ার বাড়িয়ে দেওয়া পা ব্যর্থ করে দেয় তাকে।’
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের দুর্দান্ত ক্রস থেকে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রোমেলু লুকাকু। গোলমুখের সামনে দাঁড়ানো এ স্ট্রাইকারের গায়ে বল লাগায় লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।’
বিরতির পর অ্যাক্সেল উইটসেলের ক্রস থেকে ভারানের চ্যালেঞ্জে ঠিকমতো হেড নিতে পারেননি লুকাকু। গোলবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায় বল।’
ম্যাচের প্রথমার্ধে যদিও দুই দল একের পর আক্রমণ করেছে, এরপরেও গোলশূন্য ছিল। ফ্রান্সের চেয়েও বল দখলে অনেক এগিয়ে ছিল বেলজিয়াম। এমবাপেদের পায়ে যখন ৪০% বল ছিল। ঠিক ওই সময়ে লুকাকুদের বল দখলে ছিল ৬০%।’
৫০ মিনিটে জিরুদের শট ব্লক করে কর্নার বানান কোম্পানি। পরের মিনিটে গ্রিয়েজমানের ওই কর্নার থেকে কাছের পোস্টে ফেলাইনির চেয়ে উঁচুতে লাফিয়ে হেড করে বল জালে জড়ান উমতিতি।’
এমবাপের ৫৬ মিনিটের ব্যাকহিল থেকে বল পেয়েছিলেন জিরুদ। কিন্তু কোর্তোয়া তাকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে দেননি ফরাসিদের।
৬৫ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে দ্রিয়েস মের্টেন্সের লম্বা ক্রস গোলমুখে হেড করেছিলেন ফেলাইনি। গোলপোস্টের কয়েক ইঞ্চি পাশ দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় বেলজিয়াম মিডফিল্ডারের এ চেষ্টা। দুই মিনিট পর এমবাপের আবারও সুযোগ তৈরি করে দেন জিরুদকে। কিন্তু চেলসি ফরোয়ার্ড গোলবারের ওপর দিয়ে বল মেরে আবার সুযোগ নষ্ট করেন।’
সমতা ফেরাতে মরিয়া বেলজিয়াম বক্সের মধ্যে জায়গা খুঁজছিল হন্যে হয়ে। ৭৩ মিনিটে ডি ব্রুইনের ক্রস বক্সের মধ্যে বিপদ ডাকার আগেই পল পগবা হেড করে মুক্ত করেন।’
৮১ মিনিটে ট্যাকল করে হ্যাজার্ডের পা থেকে বল মুক্ত করেন ভারানে। কিন্তু বল চলে যায় উইটসেলের পায়ে। তার বুলেট গতির শট পাঞ্চ করে প্রতিহত করেন লরিস।’
বেলজিয়াম একাদশ : থিবাত কর্তোয়া (গোলরক্ষক), ভিনসেন্ট কম্পানি, ইয়ান ভার্টোঙ্গেন, টবি অ্যালডারউইয়ারল্ড, অ্যাক্সেল উইটজেল, কেভিন ডি ব্রুয়েন, ম্যারুয়েন ফেলাইনি, মুসা দেম্বেলে, রোমেলু লুকাকু, ইডেন হ্যাজার্ড ও নাসের চ্যাডলি।’
ফ্রান্স একাদশ : হুগো লরিস (গোলরক্ষক, অধিনায়ক), স্যামুয়েল উমতিতি, রাফায়েল ভারানে, লুকাস হার্নান্দেজ, বেনজামিন পাভার্দ, আন্তোনিও গ্রিজম্যান, এনগোলা কন্তে, পল পগবা, অলিভিয়ের জিরু, মাতুইদি ও কাইলিয়ান এমবাপে।