আইসিসি এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে বিন সৈকত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিসিবির একটি সূত্র দৈনিক মানবজমিনকে এটি নিশ্চিত করেছে। ফলে এখন থেকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আর আম্পায়ারিং করবেন না আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়া বাংলাদেশের এই আম্পায়ার।
মূলত মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমাতে বাইলজ পরিবর্তনে ক্ষুব্ধ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সৈকত। এর আগে একই কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের (ডিপিএল) টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনিও পদত্যাগ করেন।
ঘটনা ডিপিএলে লীগ পর্বের শেষ রাউন্ডে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের। ফিল্ডিংয়ের সময় বেশ কয়েক দফায় দুই আম্পায়ার তানভীর আহমেদ ও শরফৌদ্দুলা ইবনে বিন শহীদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়ান মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। এমনকি ম্যাচের পর সৈকতকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে করেন আপত্তিকর মন্তব্য। মাঠে অসদারচণের জন্য প্রথমে এক ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় তাকে। এরপরের দিন সংবাদমাধ্যমে করা মন্তব্য আমলে নেয়ার পর টেকনিক্যাল কমিটির টেবিলে তাওহীদের ভাগ্যে যোগ হয় বাড়তি ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট। এতে নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে ২ ম্যাচ আর ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় মোহামেডান অধিনায়ককে।
ফলে সুপার লীগে প্রথম দুই ম্যাচে একাদশের বাইরেই থাকতে হতো হৃদয়কে। কিন্তু দেখা যায় দ্বিতীয় ম্যাচে অগ্রনী ব্যাংকের বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন তিনি। তখন এ নিয়ে কৌতূহল দেখা দেয় কারণ, শাস্তি কমানো নিয়ে বিসিবি কোনো বিবৃতিও দেয়নি। পরে জানা যায়, হৃদয়ের শাস্তি কমাতে ডিপিএলের বাইলজই পাল্টে ফেলা হয়েছে। যেখানে ৪ থেকে ৭ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা এক ম্যাচ করা হয়েছে। এতেই ক্ষুব্ধ হন সৈকত। তিনি নিজে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও, বিসিবির একটি সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছে সৈকত সরাসরি বলেছেন তিনি এই অন্যায় সহ্য করে আম্পায়ারিং করবেন না।
হৃদয় শাস্তি কমানোর জন্য টেকনিক্যাল কমিটির নিকট একটি চিঠি দেন। তবে এটি তাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না উল্লেখ করে সেই চিঠির জবাব দেয়নি টেকনিক্যাল কমিটি। পরে তাদের উপেক্ষা করেই বিসিবির আম্পায়ারস বিভাগ নিষেধাজ্ঞা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ আম্পায়ারস বিভাগের এই এখতিয়ার নেই। শাস্তি কমাতে পারে শুধু সিসিডিএম ও টেকনিক্যাল কমিটি। এ ব্যাপারে কয়েকবার ফোন দিলেও যোগাযোগ করা যায়নি আম্পায়ারিং কমিটির প্রধান বিসিবি পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠুর সঙ্গে।
এর আগে একই ঘটনায় পদত্যাগ করেন টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনি। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন, ‘কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট।’ তবে টেকনিক্যাল কমিটির একটি সূত্র মানবজমিনকে জানায়, ‘এসব ক্ষেত্রে কি কেউ সরাসরি বলতে পারে? তাকে তো একটা কারণ দেখাতেই হতো। কিন্তু একটা টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান হুট করে কেন পদত্যাগ করে সেটা তো বুঝতেছেনই। আমি এ বিষয়ে কিছু বলবো না কিন্তু তিনি অসন্তোষ নিয়ে ছেড়েছেন।

প্রতিনিধি