অনলাইন ডেস্ক: পবিত্র আল-আকসা মসজিদে লাইলাতুল কদরের রাতে যেন এক অন্যরকম দৃশ্য। রাতের আঁধারেও আলোর মিছিল, লাখো মুমিনের অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা। ইসরায়েলি বাহিনীর নানা বিধিনিষেধের বাধা পেরিয়ে, ভয় আর উৎকণ্ঠা উপেক্ষা করে, তারা ছুটে এসেছিলেন প্রভুর দরবারে।
গত বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে লাইলাতুল কদরের এই পবিত্র রাতে জেরুজালেমের আল-আকসার আকাশ যেন লাখো কণ্ঠের ‘আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। এই রাতে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মুসল্লি আল-আকসার আঙিনায় সমবেত হন। তারা ইশা ও তারাবি নামাজ আদায় করেন, অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
জেরুজালেম গভর্নোরেট এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী জেরুজালেম শহরকে সামরিক অঞ্চলে পরিণত করেছে। একইসঙ্গে আল-আকসা মসজিদে লাইলাতুল কদর পালনের জন্য আসা মুসল্লিদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।’ কিন্তু মুমিনদের হৃদয়ে ছিল অন্য এক তাড়না, প্রভুর সান্নিধ্য লাভের আকুলতা।
স্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠী ওয়াদি হিলওয়েহ ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, যাদের আল-আকসায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তারা মসজিদের গেটের বাইরে ইশা ও তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ইসরায়েলের ভেতরের আরব শহর ও গ্রামগুলো থেকে শত শত বাস জেরুজালেমে এসে পৌঁছায়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীর থেকে ৫৫ বছরের কম বয়সী পুরুষ এবং ৫০ বছরের কম বয়সী নারীদের জেরুজালেমে প্রবেশে বাধা দেয়। সরকারি ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী হাজার হাজার নাগরিককে আল-আকসা মসজিদে লাইলাতুল কদর পালনের জন্য জেরুজালেমে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে।
রমজানের ২৭তম রাত মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই রাতের ইবাদত হাজার রাতের চেয়েও উত্তম বলে গণ্য করা হয়। পশ্চিম তীরে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, যেখানে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণে বহু ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে।
আল-আকসায় সমবেত হওয়া প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে ছিল একই প্রার্থনা, শান্তি ও মুক্তির জন্য। তারা যেন রাতের আঁধারেও আলোর মিছিল, এক অদম্য বিশ্বাসের প্রতীক।

প্রতিনিধি