সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশটির উপকূলীয় এলাকায় চলমান সহিংসতায় আলাওয়ি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শত শত বেসামরিক নাগরিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, শুক্র ও শনিবার প্রায় ৩০টি ‘গণহত্যায়’ ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যা আলাওয়ি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে।
তবে এই দাবিগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি নিউজ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শত শত মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এই অঞ্চলটি সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তিনিও আলাওয়ি সম্প্রদায়ের সদস্য।
এসওএইচআরের তথ্যমতে, গত দুই দিনে সিরিয়ায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের হাতে আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে মনে করা হচ্ছে।
নিহতদের মধ্যে সরকারপন্থী বাহিনী ও আসাদ-সমর্থিত মিলিশিয়া যোদ্ধারাও রয়েছেন। উপকূলীয় লাতাকিয়া ও তার্তুস প্রদেশে বৃহস্পতিবার থেকে এই সংঘর্ষ চলছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১২৫ জন ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ১৪৮ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা রয়েছে।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানাকে বলেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতক হামলার’ পর সরকার পরিস্থিতি পুনরায় নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
লাতাকিয়ার এক কর্মী শুক্রবার বিবিসিকে বলেছেন, এই সহিংসতার ফলে আলাওয়ি সম্প্রদায় ‘ভয়ের মধ্যে আছে’ এবং বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, লাতাকিয়ার হেমেইমিমে অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয়ের জন্য প্রচুর মানুষ ভিড় করেছে।
এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দেখতে পাওয়া গেছে বহু মানুষ ‘আমরা রাশিয়ার সুরক্ষা চাই’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।
এদিকে, স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেশ কিছু পরিবার নিরাপত্তার খোঁজে পার্শ্ববর্তী লেবাননে পালিয়ে গেছে।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত গিয়ার পেডারসেন বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে বেসামরিক হতাহতের ‘খুবই উদ্বেগজনক’ প্রতিবেদনগুলোর কারণে তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।
তিনি সব পক্ষকে এমন কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন যা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে এবং একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক পরিবর্তনের’ সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে।

প্রতিনিধি