গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ মধ্যরাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার এমসি কলেজ শাখার দায়িত্বশীল মিজানুর রহমান রিয়াদের উপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম মনোয়ার হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কর্মী মিজানুর রহমান রিয়াদের ফেসবুকে করা একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তার উপর এ ধরনের হামলা খুবই দুঃখজনক। পতিত স্বৈরাচারের আমলে ফেসবুকে পোস্ট-কমেন্টের জের ধরে যেভাবে শিক্ষার্থীদের উপর ক্যাম্পাসের ভিতরে হামলা করা হতো, অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া পতিত ফ্যাসিস্ট কায়দায় জুলাই অভ্যুত্থানের কর্মীকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে এবং তাঁকে নিয়ে গুজব ছড়িয়ে ছাত্র শিবির যেভাবে পুরো ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তা খুবই নিন্দনীয়। বিগত সময়ে কোন ধরনের মতবিরোধ হলেই যেভাবে ‘স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি” আখ্যা দেওয়া হতো, বর্তমানে শিবিরের পক্ষ থেকে একই কায়দায় তাদের প্রতিপক্ষকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তাদের উপর হামলা করার এই প্রবণতা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে রক্ত ঝরিয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গন থেকে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মীর উপর স্বৈরাচারী কায়দার এই হামলা তাই আমাদের জন্য হৃদয় বিদারক।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ্য করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার পর বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া তাৎক্ষণিক বিবৃতি দিয়ে এ ঘটনার নিন্দা জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে তালামীযের কর্মীরা সাংগঠনিক নির্দেশনার আলোকে বৈষম্যবিরেধী আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন। শিবিরের হাতে আহত কর্মী মিজানুর রহমান রিয়াদসহ তালামীযের অনেক কর্মী এ আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন। ইতিপূর্বে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনেও তালামীয কর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যে কারণে অনেক কর্মী পরবর্তীতে চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই নৃশংস হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দেশের শিক্ষাঙ্গনকে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংসতা মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।