পুলিশি নির্যাতনের পরও বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম দিনের আন্দোলনে অনড় অবস্থানে রয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া তৃতীয় ধাপের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের মধ্যে নিয়োগ নিশ্চয়তা না পেলে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন নিয়োগপ্রত্যাশীরা।
আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিবুল্লাহ বলেন, ‘দুপুর ১২টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বা আমাদের কোনও সমাধানের কথাও বলেননি। শিক্ষক হিসেবে আমরা নমনীয় ছিলাম, দেয়ালে পিঠ ঠেকা নয় শুধু, আজ আমরা মৃত্যুর দিকে। আমাদের সুপারিশপ্রাপ্ত করে লাঞ্ছিত ও অপমান করা হচ্ছে।’
মহিবুল্লাহ বলেন, ‘যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনায় দায় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের। আমরা বলিনি, আমাদের এভাবে সুপারিশ করে রাজপথে নামতে বাধ্য করেন। আমরা কোনও দাবি নিয়ে আসিনি, আমাদের যোগদান নিশ্চিত করুন।’
বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে নিয়োগের নিশ্চয়তার আল্টিমেটাম দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জান্নাতুল নাঈম সুইটি ও ফাহমিদা রোজী দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত সরকার পক্ষের সাড়া না পাওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে চাকরীপ্রার্থীরা বৈঠক করেন। সচিবালয়ে বৈঠকে যান নিয়োগ প্রত্যাশীদের প্রতিনিধি জান্নাতুল নাঈম সুইটি, তালুকদার পিয়াস, নওরীন আক্তার, শামিমা আক্তার, মালা বোস, শাহরিয়ার আজিম।
জান্নাতুল নাঈম সুইটি ওইদিন সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানান, নিয়োগের নিশ্চয়তা ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না। বুধবার বেলা ১২টার মধ্যে নিয়োগের নিশ্চয়তা দিতে হবে। আইনগত জটিলতা নিরসন করে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া তৃতীয় ধাপের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের নিশ্চয়তা দিতে হবে। আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশ্বাসে আগেও বসে ছিলাম কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাই।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া নিয়োগ প্রত্যাশীরা। সোমবার পুলিশি নির্যাতনের পর তারা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তারও আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।