ডেস্ক নিউজ: গত কয়েক দিন ধরে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে কখনও হালকা কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার (৪ জুলাই) সকালে বৃষ্টির বেগ বাড়ার সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। এতে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে দুর্ভোগ বেড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালের ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় পাঁচ হাজার খুপড়ি ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। অনেকের ঘর তলিয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে। কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান,সকালের ভারী বৃষ্টি উখিয়া-টেকফের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা দুই হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজার খুপড়ি ঘরের ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। অনেকের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। সবচেয়ে বেহাল অবস্থা উখিয়ার থাইংখালি ও বাগগুনা এবং টেকনাফের পুটিবুনিয়া,লেদা ও নয়াপাড়া আশ্রয়কেন্দ্রের। উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি এখন রোহিঙ্গাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড়ের ঢালুতে থাকা রোহিঙ্গা বসতির মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়েছিল। আজ সকালের ভারী বৃষ্টিতে প্রায় একহাজার রোহিঙ্গা পরিবারের খুপড়ি ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে।’ ওই রোহিঙ্গা শিবিরের সভাপতি মো. হারুন বলেন,‘ভারী বৃষ্টিতে উখিয়ায় প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গার খুপড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বিশেষ করে, নারী ও শিশু অমানবিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।’ বুধবার দুপুরে টেকনাফের একটি রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে দেখা যায়,বেশ কিছু বাঁশের তৈরি খুপড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, অনেক খুপড়ি ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। এসময় কয়েক জন রোহিঙ্গাকে বিধ্বস্ত ঘর মেরামত করতে দেখা যায়। এখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। গত আট মাস আগে পাঁচ সন্তান নিয়ে লেদা বক্কর মেম্বর নামক এলাকার রাস্তার পাশের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেন নুর নাহার বেগম। তার বাড়ি মিয়ানমারের হাসসুরা গ্রামে। ওই শিবিরের বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই মিয়ানমারের হাসসুরা গ্রামের বাসিন্দা। নুর নাহার বেগম বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমার কোনও ঘর নেই। শেষ আশ্রয়টুকু ভারী বৃষ্টিতে ধসে গেছে।’ আরও এক রোহিঙ্গা নারী দিলদার বেগম বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরে বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বৃষ্টিতে দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে। এতে ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে ঝুপড়ি ঘরে পানি ঢুকে মটির চুলা ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চাল থাকলেও রান্না করার উপায় নেই।’ এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা বলেন,‘বুধবার ভোরের দিকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার ব্যাপারটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।’