মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধের মধ্যে সম্প্রতি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ঘেঁষা ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এখন তাদের দখলে। এ প্রেক্ষাপটে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে শঙ্কায় সীমান্তে তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি নাফ নদে কড়া নজরদারি করছে কোস্টগার্ড।
এদিকে, মিয়ানমারে চলমান এই অবস্থার মধ্যেই শুরু হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে ট্রলার চলাচল। বৃহস্পতিবার দুপুরে জরুরি খাদ্যপণ্য ও সেন্টমার্টিনের কিছু বাসিন্দাকে নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় দুটি ট্রলার। এতে স্বস্তি ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদের মাঝে। স্বস্তি ফিরলেও মিয়ানমারের উত্তেজনা নিয়ে স্বস্তিতে নেই সীমান্তবাসী। তাদের মতে, নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশে আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে কক্সবাজার-টেকনাফ।
টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় বসবাস করেন নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, এমনিতেই লাখ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা মাথায় নিয়ে আমাদের দিন কাটাতে হয়। নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা আমরা এই দেশে চাই না। রোহিঙ্গারা নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত আছে। রোহিঙ্গারা খুন অপহরণ ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। রোহিঙ্গাদের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে বলেও জানান নাছির উদ্দীন।
আন্দুল কাইয়ুম নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবিকে আরও কড়াকড়ি অবস্থানে থাকতে হবে। আমাদের সীমান্ত এলাকা এখনও অরক্ষিত। যেকোনো সময় রোহিঙ্গা ঢুকে যেতে পারে।’
গেল আগস্ট-সেপ্টেম্বর দুই মাসে ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। কিন্তু অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বড় ধরনের কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন।
শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। নাফ নদীতে কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’
এদিকে, সবশেষ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটে ২০১৮ সালে। সে সময় একসঙ্গে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটে। সরকারি হিসাবে, দেশে এখন রোহিঙ্গা আছে ১২ লাখের বেশি।