সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ কুস্তিখেলা। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে ফিরেয়ে আনতে জেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থার যৌথ আয়োজনে এই আন্তঃ উপজেলা কুস্তিখেলার আয়োজন করা হয়। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলার খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ছিল আন্তঃ উপজেলার এই কুস্তিখেলার আয়েজন।
গ্রামীণ জনপদের হারিয়ে যাওয়া এই কুস্তি খেলা দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হন হাজারো মানুষ। সকালটা তাই শুরু হয় উৎসবের আমেজের মধ্য দিয়ে। দাওয়াতি খেলোয়াড়দের সাথে লড়তে স্ব স্ব শিবিরে ছিলো উত্তেজনা। দর্শকদের মহুর মহু তালি জানান দেয় বাঙালীর চিরচেনা এই খেলার কদর কমেনি একটুও। গ্রামীণ এই খেলার মাধ্যমে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারা সমুন্নত রাখার প্রত্যয় ব্যক্তয় করেন মাঠে আসা দর্শক ও খেলোয়াড়রা। গ্রামবাংলার শত বছরের ঐতিহ্য কুস্তিখেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান দর্শনার্থীদের।
সকালে আন্তঃ কুস্তিখেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। গ্রামীণ কুস্তিখেলাকে এগিয়ে নিতে সরকারি পৃষ্টপোষকতার কথা জানান তিনি। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
আন্তঃ উপজেলা কুস্তিখেলায় একে একে জেলা সদর, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর, জামলাগঞ্জ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা শতাধিক খেলোয়াড়রা তাদের বীরত্বের জানান দেন। দুপুরে চূরান্ত প্রতিযোগিতায় সদর উপজেলার সাথে মুখোমুখি হয় তাহিরপুর উপজেলা। খেলার প্রথমভাগে দুই দলের খেলয়াড়দের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও শেষভাবে সদর উপজেলার খেলোয়াড়রা অসাধারণ নৈপুণ্যের মাধ্যমে ৩-১ এর ব্যবধানে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান দলকে। খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেডক্রিসেন্টের বাংলাদেশের সদস্য নুরুল ইসলাম সাজু, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আল আমীনসহ ক্রীড়া সংস্থার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেলাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি নানা উদ্যোগের কথা জানান আয়োজকরা।
আন্তঃউপজেলা কুস্তিখেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লা আল নোমান জানান, কুস্তিখেলা গ্রামবাংলার একটি জনপ্রিয় খেলা। আমরা চাই এই কুস্তিখেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। তাই প্রতি বছর আমাদের এই আয়োজন। ভবিষ্যতে এর ধারা অব্যাহত রাখতে ক্রীড়া সংস্থা বদ্ধপরিকর। সরকারি বেসরকারি প্রচেষ্টায় কুস্তিখেলা তার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পাবে এমনটাই প্রত্যাশা খেলা প্রেমিদের।
প্রতিনিধি