Home » বাবার মৃত্যুর পরদিনই ‘জীবনযুদ্ধে’ দুই শিশু

বাবার মৃত্যুর পরদিনই ‘জীবনযুদ্ধে’ দুই শিশু

নিউজ ডেস্ক: ১১ বছর বয়সের সাইফুল ও ১৩ বছর বয়সের নীলুফা, এরা আপন দুই ভাই-বোন। বাড়ী বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের সন্ধীপ পাড়ায়। বাবা মো. সেলিম। পেশায় ছাতা মেকানিক। লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ২২ জুন শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে ওপারে চলে যান তিনি। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও চার সন্তান রেখে যান ছাতা মেকানিক মো. সেলিম। পাঁচ সদস্যের সংসারে মৃত্যুর সময় একদানা চাউলও রেখে যেতে পারেননি সেলিম। শুধু রেখে গেছেন- চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা অর্থের ঋন। তাই পরিবারে আর কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় বাধ্য হয়েই গত ২৩ জুন থেকে দুই ভাই বোনকে শিক্ষা জীবন বাদ দিয়ে নেমে পড়তে হয়েছে জীবন যুদ্ধে। যে বয়সে বই খাতা কলম নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা; অথচ সে বয়সেই দু‘জনকে জীবিকার তাগিদে শিক্ষাজীবন থেকে ছুটি নিয়ে হাল ধরতে হয়েছে পৈতৃক পেশা ছাতা মেরামতের। আর এ কাজ থেকে উপার্জিত টাকা দিয়েই চলে বাবা বিহীন পাঁচ সদস্যের সংসার। যে দিন উপার্জন না হয়, সেদিন চুলায় আগুন জ্বলেনা। তখন ক্ষুধার সাথে যুদ্ধ করে পরিবারের সদস্যদেরকে অনাহারেই কাটাতে হয়। বাবা মারা যাওয়ার আগে সাইফুল ও নীলুফা কাটাপাহাড় নূরানী মাদ্রসায় পড়তো। ছেলেটি হেফজখানায়।

নীলুফা বলেন, সারা দিন ছাতা মেরামত করে দেড়-থেকে দুইশ টাকা পাই। এ দিয়ে সংসার চলেনা। তাও ভাগ্য ভালো, বাবা বেঁচে থাকতে মেকানিকের কাজটা শিখে নিয়েছিলাম। না হয়, না খেয়েই মরতে হত। এখন বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করবো নাকি পরিবারের সদস্যদের খাবার যোগাড় করবো। কিছু ভাবতে পারছিনা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আজিজনগর ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন রানা জানান, শিশু দুটির সামনে গেলে তাদের অসহায়ত্ব ও করুন দৃশ্য সকলের হৃদয় রীতিমত নাড়া দেবে। আসুন শিশু দুটিকে এ কাজ থেকে বের করে, পুনরায় শিক্ষাজীবনে যাবার ব্যবস্থা করে দিই। আর সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দিই তাদের পরিবারের প্রতি। সহযোগিতার হাত বাড়াতে যোগাযোগ করুন- মো. সাহাব উদ্দীন, মোবাইল নং- ০১৭০৮-০৭০৮৭৭, মো. ছাদেক, এডমিন, আজিজনগর ব্লাড ব্যাংক, মোবাইল- ০১৮২৭-৯৩৭৩৩২।

আজিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন কোম্পানী বলেন, শিশু দুটির বাবা সেলিম মারা যাওয়ার আগেও চিকিৎসার জন্য সাহায্য সহযোগিতা করেছিলাম। বর্তমানে শিশু দুটি যেন পুণরায় পড়ালেখা করতে পারে, সে ব্যবস্থাসহ পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *