মোহাম্মদপুরে যার নেতৃত্বে ডাকাতি হয়েছে তিনি একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। লেফটেন্যান্ট কর্নেল র্যাঙ্কের কর্মকর্তা শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বরখাস্ত হন। ডাকাত দলে আরও ছিলেন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশে কর্মরত আটজন। ডাকাতির মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ১৯ জন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগ, আলামত উদ্ধার নিয়েও তাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে।
গেল ১১ অক্টোবর রাত সোয়া ৩টার দিকে মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসা ও অফিসে ডাকাতি হয়। হানা দেওয়ার আগে বাসার উল্টা পাশে নুর বিরিয়ানিতে খাওয়া দাওয়া করে ডাকাতেরা।
ভুক্তভোগী পরিবারটি বলছে, পোশাক পরা কর্মকর্তারা বারবার মোবাইলে তথ্য আদান প্রদান করছিল। তাদের ধারণা, বাইরে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বড় পদের কেউ।
ব্যবসায়ী আবু বক্কর বলেন, ‘ডাকাত দলের এক সদস্য আমার আলমারি খুলে অস্ত্র আছে কিনা সেটা দেখাতে বলেন। আমি আলমারি খুলে দিলে তারা নগদ অর্থ ও সোনা একত্র করে একটি ব্যাগে ভরে নিয়ে যান। তখন তারা বলেন, এগুলোর হিসাব দেখাতে হবে বলে নিয়ে যেতে হবে।’
তদন্তে ডাকাতদের পরিচয় পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলের নেতৃত্ব দেয়, ৩৮ বিএমএ লং কোর্সের সাবেক কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট কর্নেল নজরুল। ২০১৯ সালে নারী কেলেঙ্কারির দায়ে চাকরিচ্যুত হন তিনি। র্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালকও ছিলেন তিনি। ডাকাতি ঘটনার মূলহোতা তিন মাসের ভিসা নিয়ে থাইল্যান্ড পালিয়েছেন। ডাকাতিতে বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া এক মেজর ও পুলিশের এডিশনাল এসপিও জড়িত রয়েছেন।
ডাকাতির অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্তত আটজন বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত। এর মধ্যে রয়েছে সেনাবাহিনীর দুজন, সেনাবাহিনী থেকে র্যাবে পেশনে আসা তিনজন। বিজিবি ও বিমানবাহিনীর দুজন রয়েছে। আর পুলিশের এসআই পদমর্যাদার একজন।
৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করেছে এই ডাকাত দল।
র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, যারা সার্ভিং সদস্য তাদের এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের যেহেতু ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আসছে, তাদের সকলের সহযোগিতায় তদন্ত চলছে।