Home » ইরানের তেল খাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

ইরানের তেল খাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞার পরিসর বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে শুক্রবার (১১অক্টোবর) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, “এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ইরানের জ্বালানি তেল বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে অবৈধভাবে পৌঁছে দেওয়া ‘ভৌতিক জাহাজবহরের’ (ঘোস্ট ফ্লিট) বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দ্বার উন্মোচিত হলো। ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করা কোনও সন্ত্রাসী সংগঠনকেও তারা আর সমর্থন দিতে পারবে না।”

১ অক্টোবরের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল। লেবানন ও গাজায় চলমান আগ্রাসন এবং ইরানের মাটিতে হামলা চালিয়ে হামাস নেতাকে হত্যা করায় ইসরায়েলকে ‘সমুচিত জবাব’ দিতে ওই হামলা চালিয়েছিল তেহরান।

প্রতিশোধের জন্য ইরানের তেলক্ষেত্রে হামলা না করে বরং বিকল্প কোনও উপায় ইসরায়েলের বেছে নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তেলক্ষেত্রে হামলা করা থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দেনদরবার করছে উপসাগরীয় দেশগুলো। তাদের আশঙ্কা, এই হামলা হলে তেহরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোও সংঘর্ষে জড়িয়ে যাবে এবং সংঘাতের ব্যাপ্তি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে। তখন তাদের নিজেদের তেলক্ষেত্র ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

ইউএস ট্রেজারি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে তারা।

ট্রেজারি বিভাগ আরও জানিয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য ১৬টি সংস্থা ও ১৭টি জাহাজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাইডেনের আমলে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবসা করতে সমর্থ হয়েছে ইরান। পাশাপাশি চীন তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা হয়ে উঠেছে। ফলে ইরানের তেল রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈশ্বিক রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপ বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জোরদার করতে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে মার্কিন প্রশাসন। তবে এই পন্থা অবলম্বন করলে দুই অংশীদার, মালয়েশিয়া ও আমিরাতের ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে হবে। অথচ ইসরায়েলের পক্ষে যায় এমন কোনও পদক্ষেপ নিতে এই দুইদেশ আবার রাজি নয়।

সংস্থাটি আরও বলেছে, ইরানের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন কিনে থাকে। তাই ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তাদের জ্বালানি তেল পরিবহনকারী চীনা জাহাজের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিতে হবে মার্কিন প্রশাসনকে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *