বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিলের পক্ষে বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীতে এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা বলেছেন, এই আইন সংশোধনের সুযোগ নেই। আরেক আলোচনায় অনলাইন মাধ্যমের বিভিন্ন আইনে ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বাতিলই নয়, আওয়ামী লীগের আমলে যারা হয়রানি হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। অপব্যবহারের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে জড়িতদের।
২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বক্তব্যের জেরে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। এসময় তাকে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। উস্কানিমূলক মিথ্যা ছড়ানোর অভিযোগে জেলে খেটেছেন ১০৭ দিন।
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর হয়ে গেছে এখনও পর্যন্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়নি, ট্রায়াল তো শুরু হয়নি। এখনও আমি প্রতিমাসে হাজিরা দিচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, শহিদুল আলমের মতো এমন ভুক্তভোগী অনেক। তাদের নিয়ে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গোলটেবিল বৈঠক করে তিনটি সংগঠন। হয়রানির শিকার এসব মানুষ, নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে, বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবি করেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সব মামলাগুলি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যারা ভুক্তভোগী, যাদের অধিকার হরণ হয়েছে তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, নিশ্চত করতে হবে অবিলম্বে। কালক্ষেপনের কোনো সুযোগ নেই।
একই দিনে মহাখালীতে, সাইবার আইনে নিরাপত্তা ও বাক স্বাধীনতার ভারসাম্য নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করে টেলিযোগাযোগ বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন টিআরএনবি। সে আলোচনায় উঠে আসে সামাজিক মাধ্যম, ডেটা সেন্টার, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ নানা খাতের নিরপত্তা ইস্যু। সংশ্লিষ্টদের মত–এই আইন সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই, পুরোপুরি বাতিল করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাক স্বাধীনতার ভারসাম্য রক্ষা কোরে, প্রযুক্তিখাতে নিরাপত্তার জন্য নতুন আইন প্রয়োজন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ‘আমি যখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাইবো, যখন প্রযুক্তি আনতে চাইবো সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সুতরাং সেটাকে যখন নিরাপদ করতে যাবো আমাদের খরচ বেড়ে যাবে। এখানে সমন্বয় করতে হবে।’
তথ্য-প্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এটার ওপরে কাজ শুরু হয়ে গেছে, চলমান আছে। আমরা আশা করছি, সকল স্টেকহোল্ডারের যে বিষয়গুলো আছে এগুলোকে সমন্বয় করেই সার্বিকভাবে উপস্থাপন করা হবে।’
সাইবার নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংস্থাগুলোর তৎপরতা বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।