Home » জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সমন্বয়কের পদত্যাগ, জানালেন দুটি কারণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সমন্বয়কের পদত্যাগ, জানালেন দুটি কারণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার ১৭ জন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক একযোগে পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়। কারণগুলো হলো- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির কতিপয় সমন্বয়কের বিতর্কিত কার্যক্রম ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের বিরুদ্ধে কাজ করা।

পদত্যাগকৃত সমন্বয়করা হলেন- আব্দুর রশীদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক, ঐন্দ্রিলা মজুমদার এবং সহ-সমন্বয়করা হলেন জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম। তাদের মধ্যে আব্দুর রশীদ জিতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং জুলাই বিপ্লবে আহত সকল সংগ্রামী ভাইবোনদের সুস্থতা কামনা এবং শহীদদের উৎসর্গকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন পদত্যাগকৃত সমন্বয়করা।

পরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুর রশীদ জিতু বলেন, ‘গত ১৩ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই সংগঠনটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সাভার এলাকায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। গত ৫ আগস্ট আমরা আমাদের সফলতা অর্জন করি। এই পুরো সময়টিতে আমরা সকলে একই লক্ষ্যে কাজ করেছি।’

আব্দুর রশীদ জিতু বলেন, ‘৯ দফার ওপর ভিত্তি করে কোটা সংস্কার আন্দোলন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়। যে ৯ দফার ওপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছেন সে ৯ দফার অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একপ্রকার নিশ্চুপ রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমানে একটি সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীদের একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যানার আন্দোলনে সর্বপেশার, সর্বস্তরের এবং সর্বদলের মানুষের অংশগ্রহণের ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়গুলোতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করে দিতে হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সাভার এলাকায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *