লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের নেপথ্যে এবার এক ভারতীয় অভিবাসীর নাম উঠে এসেছে। কেরলের ওয়েনাডে জন্মানো ৩৭ বছর বয়সী রিনসন হোসে বর্তমানে নরওয়ের নাগরিক। বুলগেরিয়ায় তার সংস্থাই লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহকে বিস্ফোরকযুক্ত ওই পেজারগুলি সরবরাহ করেছিল বলে জানা যাচ্ছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বিশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, পেজারগুলোতে তিন গ্রাম বিস্ফোরক ও একটি চিপ লুকানো ছিল। এই কাজ ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা-মোসাদের পরিকল্পিত। চিপ থেকে মোসাদের কাছে সংকেত পৌঁছে যেত। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পেজারগুলো তাইওয়ানের কোম্পানি গোল্ড অ্যাপোলো নির্মাণ করেছে।
তবে গোল্ড অ্যাপোলো জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত পেজারের মডেল এআর-৯২৪ আসলে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট ভিত্তিক কোম্পানি বিএসি কনসালটিং কেএফটি নামের কোম্পানিটি তৈরি ও বিক্রি করেছে। তবে গোল্ড অ্যাপোলো সংস্থার ট্রেডমার্ক ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে তাদের কাছে।
কিন্তু বুধবারের বিস্ফোরণের পর, বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ডিএএনএস জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে নোরটা গ্লোবাল লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তারা। ২০২২ সালে সোফিয়ায় ওই সংস্থাটির নাম সরকারি খাতায় নথিবদ্ধ হয়। নরওয়ের বাসিন্দা রিনসন হোসে সংস্থাটির মালিক।
তবে শুক্রবার ডিএএনএস জানায়, আসলে ওই পেজারগুলি বুলগেরিয়ায় তৈরি হয়নি। সেখান থেকে রফতানিও করা হয়নি। সন্ত্রাস বা নাশকতা সরঞ্জামের ব্যবসা নিয়ে কড়া আইন রয়েছে দেশে। ওই সংস্থা সেই আইন লঙ্ঘন করেনি।
এরপর নরওয়ের ওসলো পুলিশ জানায়, রিনসনের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে তারা। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে উচ্চশিক্ষার জন্য নরওয়ে যান রিনসন। কিছুদিন লন্ডনে কাজ করে আবারও ওসলো ফিরে আসেন।
নরওয়ের সংবাদ সংস্থা ডিএন মিডিয়ার ডিজিটাল কাস্টমার সাপোর্ট বিভাগে যোগ দেন রিনসন। ওই সংবাদ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, মঙ্গলবার থেকে কাজের জন্য বিদেশে রয়েছেন রিনসন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
রিনসনের পরিবার জানিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে ওসলোয় থাকেন রিনসন। রোজ বাড়িতে কথা হতো। কিন্তু গত তিন দিন ধরে যোগাযোগ নেই তার সঙ্গে।