খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বাসিন্দা মো. মামুনকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন দীঘিনালা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশের একপর্যায়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর কয়েক রাউন্ড গুলিও ছুড়েছে তারা। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে উপজেলার লারমা স্কয়ারসংলগ্ন পাহাড়ি ও বাঙালিদের মিশ্রিত দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তাৎক্ষণিক এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এতে প্রায় শতাধিক দোকানপাট পুড়ে গেছে বলে জানা যায়।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল হক বলেন, ‘কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টার দিকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পানখাইয়া পাড়ায় মো. মামুন (৩০) নামে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মামুন খাগড়াছড়ির মধ্য শালবাগান এলাকার মৃত নূর নবীর ছেলে। এ ঘটনার জন্য পানখাইয়া পাড়াবাসীকে দায়ী করেছেন মামুনের স্বজনরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে ওই এলাকায় এক পাহাড়ি বাড়িতে মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন মামুন। এ সময় পাড়ার লোকজন পিটুনি দিলে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, অন্ধকারে মোবাইল ও টর্চলাইটের আলোতে দুই-তিন জন ব্যক্তি ওই যুবককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করছেন। প্রাণে বাঁচার জন্য চিৎকার করতে করতে মাফ চাইলেও তারা থামেননি। ফেসবুকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
এদিকে, মামুনকে হত্যার প্রতিবাদে বুধবার বিকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে হত্যাকারীদের শনাক্ত, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিষদের নেতা আসাদ উল্ল্যাহ, আবদুল মজিদ ও মাসুম রানা।