ভারতের মণিপুর রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। রাজ্য সরকারের দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উসকানিমূলক ছবি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মণিপুর রাজ্যের ভূখণ্ডে ইন্টারনেট ও মোবাইল ডাটা পরিষেবা, লিজ লাইন, ভিস্যাট, ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএন পরিষেবাগুলো ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মেইতেই ও খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলমান। সম্প্রতি এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়ারা অবরোধ করেছে।
মঙ্গলবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। এর আগে, সোমবার ছাত্রদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, সম্প্রতি বিদ্রোহীদের দ্বারা ব্যবহৃত রকেট ও ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ এই হামলাকে সহিংসতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি বলে অভিহিত করেছে।
সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সের (টুইটার) মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজবের প্রচার রোধ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, জনজীবনের নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির সুরক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি ও সরকারি চাকরি নিয়ে উত্তেজনা ও বিরোধ চলে আসছে। চলমান সংঘাতের মূল কারণ হিসেবে এই বিরোধকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।