সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের হেফাজতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে সিলেট থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হতে পারে তাকে।
বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার আদাবর থানা এলাকায় পোশাকশ্রমিক রুবেলকে হত্যার ঘটনার মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয় গত পরশু। তবে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য্য রেখেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।
ফলে সিলেট থেকে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওই মামলায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ঢাকার আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে তাকে কখন, কবে ঢাকায় নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিহত হন পোশাকশ্রমিক রুবেল। এ ঘটনায় তার বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২২ আগস্ট আদাবর থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদসহ ১৫৬ জনের নামোল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
গত শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে জখম এবং স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত ছিল। সেদিন রাতে দুই দফা অস্ত্রোপচার শেষে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গতকাল বুধবার তাকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানান, বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে সাধারণ কেবিনে কারা হেফাজতে ভর্তি রয়েছেন তিনি। তার শারীরিক দুর্বলতা আছে।
এর আগে, গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরদিন ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতে হাজির করার সময় তিনি জনরোষে পড়েন। তার ওপর ডিম, জুতা নিক্ষেপ করে ক্ষুব্ধ জনতা। মারধরও করা হয় তাকে।
এদিকে, গত রোববার রাতে কানাইঘাট থানা পুলিশ বাদী হয়ে মানিকের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা করে। ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে এ মামলা হয়। এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তাকে।
এছাড়া সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে।