রাজধানীর হাতিরঝিলের লেক থেকে সারা রাহানুমা (৩২) নামে এক নারী সংবাদকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জি-টিভির নিউজরুম এডিটর হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হাতিরঝিল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ তথ্য জানান।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ইসলামবাগ কৃষ্ণপুর গ্রামের বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে সারা রাহনুমা। বর্তমানে মিরপুরের কল্যাণপুরে স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রাহানুমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সাগর নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘হাতিরঝিল লেকের পানিতে ভাসমান অবস্থায় ওই নারীকে দেখতে পাই। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের স্বামী সায়েদ শুভ্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভালোবেসে সাত বছর আগে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম আমরা। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সারা অফিসে যায়। পরে এক ব্যক্তিকে দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসা ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দেয়। ফোন করে তাকে বলি, রাতে তো তুমি বাসায় আসতে, তাহলে অন্যকে দিয়ে কেন টাকা পাঠিয়ে দিয়েছো কেন? তখন সে ব্যস্ত আছি বলে ফোন রেখে দেয়। রাত ৩টার দিকে খবর পাই, সে হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে। ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে থেকে সারা আলাদা হয়ে যেতে চাচ্ছিল। আমরা দুজনই কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দেশের এই পরিস্থিতিতে আর যাওয়া হয়নি।’
এদিকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের লোকেশন দিয়ে ফাহিম ফয়সাল নামে একজনকে উদ্দেশ করে সারা তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আপনার মতো একজন বন্ধু পেয়ে ভালো লাগলো, ঈশ্বর আপনাকে সর্বদা আশীর্বাদ করুন। আশা করি, আপনি শিগগিরই আপনার সমস্ত স্বপ্ন পূরণ করবেন। আমি জানি, আমরা একসঙ্গে অনেক পরিকল্পনা করেছি। দুঃখিত আমাদের পরিকল্পনা পূরণ করতে পারিনি, ঈশ্বর আশীর্বাদ করুন।’
এছাড়া অন্য আরেকটি স্ট্যাটাসে সারা লেখেন, ‘জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।’
বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমরা মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রেখেছি। ঘটনাটি হাতিরঝিল থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।’