Home » আমার ঘরে গলাসমান পানি, কিছুই খাইনি

আমার ঘরে গলাসমান পানি, কিছুই খাইনি

আমার ঘরে গলাসমান পানি। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত থেকে কিছুই খাইনি। আমার চার ছোট ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীসহ ছয় জনের পরিবার। পাশের চাচাতো ভাইয়ের দোতলা ভবনের ছাদে আমরা রাত কাটিয়েছি। ওই ছাদে আমার পরিবারের মতো কমপক্ষে ৫০ জন মানুষ রাত কাটিয়েছি। এখনও সেখানে আছি।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজ সড়কে দাঁড়িয়ে বন্যায় দুর্ভোগের কথা এভাবেই বললেন হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব মন্দাগিনি এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন (৫০)।

পেশায় কৃষক হোসেন আরও বলেন, ‘দিনভর আমরা ভালো ছিলাম। এতদিনের টানা বৃষ্টিতেও আমাদের ঘরে পানি ঢোকেনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাজিরহাট নতুন ব্রিজ সংলগ্ন হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। রাত ৮টা থেকে পানি এলাকায় প্রবেশ করে। রাত ১০টা হওয়ার আগেই ঘরের ভেতর গলাসমান পানি ঢুকেছে। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। এত বছর ধরে গড়ে তোলা সংসারের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।’

ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাসেম বলেন, ‘আমার টিনের ঘরে ছেলেমেয়েসহ সাত জন সদস্য। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ঘরে পানি ঢুকেছে। নৌকায় করে কিছু স্বেচ্ছাসেবী আমাদের তীরে নিয়ে এসেছেন। পরিবারের সদস্যদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি কাল থেকে চায়ের দোকানে বসে সময় কাটাচ্ছি। কখন পানি কমবে সে অপেক্ষায় আছি।’

একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মো. কামাল (৩০) বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম শহরে গ্রিল ওয়ার্ক গ্রিল ওয়ার্কশপে কাজ করি। পরিবারে ১২ জন সদস্য। আমার টিনের ঘরে গলাসমান পানি। ঘরে চালসহ সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কষ্টে আছি। রাত থেকে এখন পর্যন্ত বনরুটি খেয়েছি। এখনও ভাত খাইনি।’

এদিকে, সকাল থেকে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় কাজ করছে বিভিন্ন চিকিৎসা টিম।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাটহাজারী উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৪ হাজার ৫০০ পরিবারের ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আজ সারাদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে।’

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *