উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) সমমান পরীক্ষা চলাকালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে সরকার পতনের আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে। এতে সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেলেও বাকি পরীক্ষাগুলোর সময়সূচি পেছানো হয়েছে কয়েক দফায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাকি পরীক্ষাগুলো না নেওয়ার দাবি তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে তারা মিছিল নিয়ে কয়েকশো শিক্ষার্থী সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় একটি রিকশায় মাইক বেঁধে নিয়ে এসেছেন। তাতে বিভিন্ন রকম দাবি দাওয়ার কথা জানাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের একটি দল ভেতরে প্রবেশ করার পর জিপিও ও পল্টনের মাঝামাঝি মুক্তাঙ্গণের পাশে এই ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে তারা ছয় নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এক পর্যায়ে সেখানে বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা সেখানে ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে মানতে হবে’; ‘দাবি হালকাভাবে নিলে, গদি যাবে চলে’; ‘আমার ভাই হাসপাতালে, আমরা কেন পরীক্ষার হলে’ প্রভৃতি স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা পালাক্রমে একেক জন বক্তৃতাও দিচ্ছেন। তারা বলছেন, কোনও শর্তেই আমরা পরীক্ষার হলে বসতে চাই না।
সচিবালয়ের ফটকে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যরা নিরাপদ জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা কোনও নির্দেশনা পাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এভাবে আসলে দায়িত্ব পালন করা যায় না।’
ভবনের উপর থেকে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড দেখছেন অনেকেই। এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ‘সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় শিক্ষার্থীরা এভাবে ঢুকে যাবে, ভাবা যায়! আমার জানা মতে, স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনও একটি দল এভাবে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে অনুপ্রবেশ করলো।’
এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশ করে বলছেন, আপনারা সরে যান। আমাদের দাবি আদায়ে সহায়তা করুন। ফটক খুলে দিন, বাইরে আমাদের হাজার হাজার পরীক্ষার্থী অপেক্ষা করছেন। ফটক খুলে না দিলে আমরা বল প্রয়োগ করবো, ফটক ভেঙে ফেলবো।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা ‘অটো পাশ’ চান না। তবে যে সাতটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর প্রাপ্ত নম্বর গড় করে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, দেড় মাসের পরীক্ষার জন্য আমরা কয়েক মাস ধরে ঝুলে আছি। আমাদের কয়েকদিন আগেও তারা জানিয়েছিল সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে পরীক্ষা হবে। তাহলে আরও এক মাস লাগবে পরীক্ষার জন্য। এরপর এক মাসব্যাপী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এত সময় নিলে আমাদের ফলাফল প্রকাশ করবে কখন? আর আমরা ভর্তি হবো কবে? একটা বোর্ড পরীক্ষা কীভাবে ছয় থেকে সাত মাস পর্যন্ত ঝুলে থাকে? সেজন্য আমরা এটা মানি না। আমরা চাই— যেসব পরীক্ষা হয়েছে সে অনুযায়ী পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হোক। দাবি না মানলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
পরীক্ষা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা নেই বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।