দুই কোটি ভিত্তিমূল্যে নিলাম থেকে মুস্তাফিজুর রহমানকে দলে চেন্নাই সুপার কিংস। দলটির জার্সিতে নিজের প্রথম ম্যাচেই ঝলক দেখিয়েছেন বাংলাদেশি তারকা বোলার। তার বোলিং নৈপুণ্যের পর ব্যাটারদের দৃঢ়তায় কোহলির বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে আইপিএল শুরু করল চেন্নাই।গতকাল শুক্রবার (২২ মার্চ) আইপিএলে উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭৩ রান তোলে বেঙ্গালুরু। জবাবে ১৮.৪ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় চেন্নাই।১৭৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার রাচীন রবীন্দ্র ও রতুরাজ গায়কোয়াড়। দলীয় ৩৮ রানে গায়কোয়াড়ের বিদায়ে প্রথম উইকেট হারায় সিএসকে। যশ দয়ালের বলে ক্যামেরুন গ্রিনের হাতে ধরা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। আউটের আগে করেন ১৫ বলে ১৫ রান।
এরপর অজিঙ্কা রাহানেকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েন রাচীন। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ৩৩ রান। দলীয় ৭১ রানের মাথায় রাচীন ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ১৫ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে করণ শর্মার বলে পতিদারের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন তিনি।
রাচীনের বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়ে চেন্নাই। অবশ্য, ড্যারিইল মিচেলকে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেন রাহানে। দলীয় ৯৯ রানে রাহানের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ১৯ বলে ২৭ রান আসে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে। রাহানের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিচেলও। দলীয় ১১০ রানের মাথায় গ্রিনের বলে আউট হন তিনি। ব্যাট হাতে করেন ১৮ বলে ২২ রান। এরপর শিবাম দুবেকে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রবীন্দ্র জাদেজা।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেন বেঙ্গালুরুর দুই ওপেনার ফাফ ডু প্লেসিস ও বিরাট কোহলি। কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলেন ৪১ রান। কিন্তু, এরপরই ছন্দপতন! মুস্তাফিজুর রহমান বোলিং আক্রমণে এসেই এলোমেলো করে দেন পুরো ব্যাটিং লাইনআপ।
শুরুটা ফাফ ডু প্লেসিসের উইকেট নিয়ে। মুস্তাফিজের আউটসাইড অফের স্লোয়ার বলটি মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ধরা পড়েন ডু প্লেসি। সাজঘরে ফেরার আগে করেন ২৩ বলে ৩৫ রান। ডু প্লেসির আউটের পর ক্রিজে আসেন রজত পতিদার। দুই বল ডট দিয়ে তৃতীয় বলটি খোঁচা মেরে উইকেটে ধোনিকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন রানের খাতা না খুলেই। একই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে আরসিবি।
সেই চাপ সামাল তো দূরে থাক, উল্টো উইকেট বিলিয়ে দলের বিপদ বাড়ান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দিপক চাহারের বলে উইকেটের পেছনে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এক বল খেললেও খুলতে পারেননি রানের খাতা। এমন পরিস্থিতি থেকে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কোহলি। ক্যামেরুন গ্রিনকে নিয়ে তার গড়া ৩৫ রানের জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। দলীয় ৭৭ রানের মাথায় মুস্তফিজের করা স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে মিডউইকেট ক্যাচ দেন কোহলি। ২০ বলে ২১ রান করেন ফেরেন এই তারকা ব্যাটার।
এক বল বাদে মুস্তাফিজ করলেন কাটার। যা সোজা আঘাত হানে স্টাম্পে। তাতেই ক্যামেরুন গ্রিন ফেরেন সাজঘরে। ২২ বলে ১৮ রানের বেশি করতে পারেননি এই অজি ব্যাটার। সবমিলিয়ে মুস্তাফিজের অসাধারণ বোলিংয়ে খেই হারিয়ে ফেলে আরসিবি। এমন অবস্থা থেকে দলকে উদ্ধার করেন দীনেশ কার্তিক ও অনুজ রাওয়াত। এই দুইজনের ৯৫ রানের জুটিতে লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় দলটি। চার ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন মুস্তাফিজ।
প্রতিনিধি