গত কয়েক দিন ধরেই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওপারের যুদ্ধের আঁচ লেগেছে এপারেও। পালিয়ে শত শত মিয়ানমারের নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার পর থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সীমান্তে কোনও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও এখনও আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয়দের।
এদিকে, গত তিন দিনে মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসেছে ২৬৪ জন সদস্য। এদের মধ্যে রয়েছে ১৮৩ জন বিজিপি,২ জন সেনাসদস্য, ৪ জন সিআইডি, ৫ জন পুলিশ, ৯ জন স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য, ২০ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া সর্বশেষ আশ্রয় নেওয়া ৩৫ জনের পরিচয় শনাক্ত প্রক্রিয়াধীন।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার ২৬৪ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখেছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ২৪০ পরিবারের অবস্থান অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে।’
সোমবার মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তের ঘুমধুমে একটি বাড়িতে এসে পড়ে। এ ঘটনায় ওই এলাকার বাংলাদেশি এক নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার আরও ১টি মর্টার শেল এসে পড়ে ঘুমধুম এলাকায়। যদিও এতে হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি।
উল্লেখ্য, গত এক বছর ধরে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির লড়াই চলছে। মাঝে কিছুদিন উত্তেজনা কমে আসলেও গত তিন দিন তুমুল লড়াই হচ্ছে।
বার্তা বিভাগ প্রধান